জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ও স্টেলা মরিস

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাভিত্তিক আন্তর্জাতিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান উইকিলিক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক পল জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ কারাগারে বিয়ের অনুমতি পেয়েছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে খুব শিগগিরই বান্ধবী স্টেলা মরিসের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে বাঁধা পড়তে যাচ্ছেন তিনি।

বর্তমানে যুক্তরাজ্যের বেলমার্স কারাগারে রয়েছে অ্যাসাঞ্জ। সেই কারাগারেই হবে বিয়ের অনুষ্ঠান।

বেলমার্স কারা কর্তৃপক্ষ এ সম্পর্কে বিবিসিকে জানিয়েছে, অন্যান্য কারাবন্দিদের মতোই প্রচলিত নিয়মে কারা গভর্নর অ্যাসাঞ্জের আবেদন বিবেচনায় নিয়ে বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন।

কারা কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করে স্টেলা বলেন, ‘আশা করছি, আমাদের বিয়েতে আর কোনও বাধা আসবে না।’

যুক্তরাজ্যে বিবাহ আইন ১৯৮৩ অনুযায়ী, বন্দিরা কারাগারে বিয়ের জন্য আবেদন করার সুযোগ পান। আবেদন মঞ্জুর হলে বিয়ে করতে পারেন তারা। তবে এক্ষেত্রে বিয়ের সব খরচ নির্বাহ করতে হয় বন্দিদের।

অ্যাসাঞ্জ এবং স্টেলা এখন কারাগারেই আইনানুযায়ী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন এবং বিয়ের খরচ তাদের নিজেদেরই বহন করতে হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত আইনজীবী স্টেলা মরিসের সঙ্গে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের পরিচয় হয় ২০১১ সালে। ওই বছর তিনি অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন।

২০১৫ সালে প্রেমে পড়ার দুই বছর পর তারা বাগদান সম্পন্ন করেন। সেই সময় লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন অ্যাসাঞ্জ। সেখানে থাকা অবস্থায়ই তাদের দুই ছেলের জন্ম হয়।

তাদের জন্মের সময় ভিডিও কলে যুক্ত হয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। সন্তানরা ইকুয়েডর দূতাবাসে বাবার সঙ্গে দেখা করেছিল বলেও উল্লেখ করেছেন স্টেলা।

অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।

ওই সব নথির মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধসম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরো ৪০ হাজার নথি ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়।

এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে সুইডেনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে ২০১২ সালে অ্যাসাঞ্জ লন্ডনের একুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন।

২০১৯ সালে জামিনের শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে যুক্তরাজ্য পুলিশ অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করার পর থেকে বেলমার্শ কারাগারে বন্দি আছেন তিনি।। অ্যাসাঞ্জ জেলে যাওয়ার পরই স্টেলার সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

এসএমডব্লিউ