করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের কানপুরে জিকা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। সোমবার কানপুরের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, শহরটিতে ১৭ শিশু-সহ অন্তত ৮৯ জনের জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

১৯৪৭ সালে প্রথমবারের মতো আবিষ্কৃত মশা-বাহিত ভাইরাস জিকা ভাইরাস ২০১৫ সালে ব্রাজিলে মহামারি আকারে পৌঁছায়। ওই সময় দেশটিতে হাজার হাজার শিশুর জন্ম হয় মাইক্রোসেফালি নিয়ে। এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের মাথা অস্বাভাবিক ছোট এবং মস্তিষ্ক শুকিয়ে ছোট হয়ে যায়। সংক্রমিত এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ায়।

ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তরপ্রদেশের কানপুর জেলার প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. নেপাল সিং বলেছেন, জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং স্বাস্থ্য বিভাগ এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েকটি দল গঠন করেছে।

তিনি বলেন, ‘আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী আছেন, যিনি গর্ভবতী। আমরা তার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছি।’

এই রোগের কোনও চিকিৎসা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করাই ঝুঁকি কমানোর একমাত্র উপায়। জিকা ভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যুর ঘটনা বিরল। এছাড়া যারা আক্রান্ত হন তাদের প্রতি পাঁচজনের মধ্যে মাত্র একজনের শরীরের রোগটির উপসর্গ দেখা দেয়।

জিকায় আক্রান্ত বুঝবেন কীভাবে?

• হালকা জ্বর
• চোখ জ্বালাপোড়া অথবা লাল হয়ে যাওয়া
• মাথাব্যথা
• হাড়ের জোড়ায় ব্যথা
• ত্বকে ফুসকুড়ি

গত কয়েক বছরে ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যদিও উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণবিষয়ক শীর্ষ সরকারি আমলা অমিত মোহন প্রসাদ রয়টার্সকে বলেছেন, এই রাজ্যে জিকার এটাই প্রথম প্রাদুর্ভাব।

গত ২৩ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের শিল্পনগরী কানপুরে প্রথম জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়। গত সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রসাদ বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আগ্রাসী কন্টাক্ট ট্রেসিং করায় লোকজনের জিকা পজিটিভ শনাক্ত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ জিকা প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে নজরদারি বৃদ্ধি এবং ভাইরাস ছড়াতে পারে এমন মশার প্রজনন ক্ষেত্র নির্মূল করছে।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস