সৌদি আরবকে ৫৫৭৭ কোটি টাকার অস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
সৌদি আরবের কাছে প্রথমবারের মতো বড় অংকের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তির আওতায় সৌদিকে ৬৫ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষোপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করবে ওয়াশিংটন। গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর উপসাগরীয় এই দেশটির কাছে এবারই প্রথম বড় অংকের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিলো বাইডেন প্রশাসন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন এই তথ্য সামনে এনেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে পেন্টাগন জানায়, সৌদি আরবের বর্তমান ও ভবিষ্যত হুমকি মোকাবিলায় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। প্রস্তাবিত এই অস্ত্র বিক্রি যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিমালার ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা বন্ধু দেশ সৌদি আরবের নিরাপত্তার উন্নতিতে এটি সহায়তা করবে।
মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরে ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হলেও ইয়েমেনে হামলা ও দেশটিতে সৃষ্ট মানবিক সংকটের কারণে মার্কিন রাজনীতিকরা রিয়াদের সমালোচনা করে আসছে। এর আগে গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সৌদির কাছে অস্ত্র বিক্রি স্থগিত করাসহ ইয়েমেন ইস্যুতে রিয়াদের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন জো বাইডেন।
বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করা হবে না- এ নিশ্চয়তার দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র এতদিন সৌদি আরবের কাছে সামরিক ক্রয়-বিক্রয় স্থগিত রেখেছিল। তবে পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন বা উন্নতি না হলেও এর কয়েক মাসের মাথায় ফের দেশটির কাছে অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিলো বাইডেন প্রশাসন।
অবশ্য বৃহস্পতিবার সিরিজ বেশ কয়েকটি টুইটে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ব্যুরো অব পলিটিক্যাল-মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স জানিয়েছে, এই মিসাইলগুলো ভূমিতে হামলার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে না।
আলজাজিরা জানিয়েছে, মধ্যপালার এআইএম-১২০সি-৭/সি-৮ মডেলের আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সৌদি আরবের কাছে ৬৫ কোটি মার্কিন ডলারে বিক্রি করছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। এছাড়া ম্যাসাচুসেটস-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রেথিওন এসব ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির প্রধান ঠিকাদার হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতরের দাবি, গত বেশ কয়েক বছরে সৌদি আরবে আন্তঃসীমান্ত হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আমরা দেখতে পেয়েছি। ফলে দেশটিতে থাকা মার্কিন বাহিনী ও ৭০ হাজারের বেশি মার্কিন নাগরিক ঝুঁকিতে পড়েছেন। তবে এসব ক্ষেপণাস্ত্র আন্তঃসীমান্ত হামলা থেকে সৌদিকে নিরাপদে রাখতে সহায়তা করবে।
এদিকে অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের এই অনুমোদনের পর কংগ্রেসে এর আলাদা করে অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছে আলজাজিরা। তবে আইনপ্রণেতারা চাইলে সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে একটি অসম্মতি বিল পাস করিয়ে সৌদির কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকিয়ে দিতে পারেন।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে হেলিকপ্টার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সৌদি আরবের সঙ্গে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
টিএম