যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় ৯৫ জন হুথি বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। দেশটির উত্তরাঞ্চলের তেল-গ্যাস সমৃদ্ধ মারিব শহরের কাছে চালানো ওই হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে বলে বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) জানিয়েছে ইয়েমেনের সৌদি সমর্থনপুষ্ট সরকার।

এদিকে উভয়পক্ষের হামলা ও পাল্টা-হামলার কারণে ইয়েমেনের আরও অনেক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের দাবি, গত ১১ অক্টোবর থেকে মারিব ও এর আশপাশে চালানো বিমান হামলায় প্রায় ২ হাজার হুথি বিদ্রোহীকে হত্যা করা হয়েছে। তবে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা নিজেদের ক্ষয়ক্ষতির কথা খুব কমই প্রকাশ করে থাকে। আর তাই হুথি বিদ্রোহীদের হত্যার ব্যাপারে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের এই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি এএফপি।

ইয়েমেনের সৌদি সমর্থনপুষ্ট সরকার বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দেশের উত্তরাঞ্চলীয় মারিব অঞ্চলের পার্শ্ববর্তী আল-জাওবা এবং আল-কাসারা নামক দু’টি জেলায় বিদ্রোহীদের অবস্থানে বিমান হামলার মাধ্যমে ২২টি পৃথক অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব হামলায় ৯৫ জন হুথি বিদ্রোহী নিহত এবং ১১টি সামরিক যান ধ্বংস হয়। ওই জেলা দু’টি মারিব থেকে যথাক্রমে ৫০ কিলোমিটার এবং ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।

অভিযানের শুরুর পর ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকটের অবসান হওয়ার পরিবর্তে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইয়েমেনে কার্যত দুই শাসকগোষ্ঠী সক্রিয় আছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক সহযোগিতার ওপর ভর করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এখনও মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে, অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হুথি বিদ্রোহীরা।

ইয়েমেনের এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ‘ছায়াযুদ্ধ’ হিসেবে দেখা হয়। টানা গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং এক সময়ের স্বচ্ছল এই দেশ।

টিএম