ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় মসজিদে অগ্নিসংযোগ এবং মুসলিমদের বাড়িঘরে ভাঙচুরের ঘটনার এক সপ্তাহ যেতে না যেতে আবারও আক্রান্ত হয়েছে মুসলিমদের স্থাপনা এবং দোকানপাট। মঙ্গলবার সন্ধ্যা দিকে ত্রিপুরার একটি মসজিদে ভাঙচুর এবং মুসলিমদের দু’টি দোকানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। উত্তর ত্রিপুরার চামটিল্লা এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ত্রিপুরা পুলিশ। 

মসজিদে ভাঙচুর এবং দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর ওই এলাকায় মুসলিম স্থাপনায় পুলিশি নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত সপ্তাহেও ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যেই মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়। রাজ্যজুড়ে সেই হামলায় অন্তত ৬টি মসজিদ এবং মুসলিমদের এক ডজনেরও বেশি বাড়িঘর-দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়।

দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ত্রিপুরা পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বার্তা পোস্ট করার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছে। একই সঙ্গে ওই এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে আশ্বস্ত করেছে পুলিশ।

বাংলাদেশে দুর্গা পূজা চলাকালীন হিন্দুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) সদস্যরা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ত্রিপুরায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। ওই বিক্ষোভ থেকে মুসলিমদের স্থাপনা ও দোকান-পাটে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এক টুইটে ত্রিপুরা পুলিশ বলেছে, ‘উত্তর ত্রিপুরা জেলা পুলিশ ওই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কিছু মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব এবং উসকানিমূলক বার্তা ছড়াচ্ছে। এ ধরনের বার্তা বিশ্বাস না করতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে। সকলে শান্তি বজায় রাখুন।’

যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্মে গুজব ছড়াচ্ছেন এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছেন; তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে— বলছে ত্রিপুরা পুলিশ।

পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি যাতে না ঘটে, সেজন্য আশপাশের সব স্পর্শকাতর এলাকায় ভারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী দেশটির সরকারি সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সহিংসতার বিরুদ্ধে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মীরা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন। সমাবেশ থেকে চামটিল্লা এলাকার একটি মসজিদে পাথর নিক্ষেপ করেছে একদল মানুষ। এতে ওই মসজিদের দরজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি বলেছেন, ওই এলাকায় ভারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।

সূত্র: এনডিটিভি।

এসএস