চীনে পরিবর্তিত এক ধরনের বার্ড ফ্লু বা এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী- ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২১ জন।

অন্যান্য ভাইরাসের মতো বার্ড ফ্লু ভাইরাসেরও বেশ কয়েকটি পরিবর্তিত ধরন আছে। চলতি বছর যে ধরনটির উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে- তার নাম এইচ৫এন৬।

২০১৭ সালে চীনের কয়েকটি প্রদেশে ভয়াবহমাত্রায় ছড়িয়ে পড়েছিল এই ভাইরাসটিরই অপর এক পরিবর্তিত ধরন এইচ৭এন৬। কয়েকশ মানুষ সেবার আক্রান্ত হয়েছিলেন, মারা গিয়েছিলেন অন্তত ৬ জন।

বার্ড ফ্লু হলো পাখিদের একধরনের জ্বর। এইচ৫এন১ নামের একটি ভাইরাস এই জ্বরের জন্য দায়ী। ভাইরাসে আক্রান্ত হাঁস-মুরগি থেকে এই ভাইরাসটি মানুষের দেহে প্রবেশ করতে পারে।

এইচ৫এন১-এর কয়েকটি পরিবর্তিত ধরন ইতোমধ্যে দেখা গেছে। এগুলো হলো এইচ১এন১, এইচ২এন২, এইচ৩এন২ এবং এইচ৭এন৯।

হাজার কিংবা লক্ষ বছর ধরে গৃহপালিত ও প্রকৃতিতে ঘুরে বেড়ানো পাখিরা আক্রান্ত হচ্ছে এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জায়, এ ভাইরাসটি তাদের জন্য প্রাণঘাতী। তবে মানব দেহে এটির সংক্রমণ বেশ ব্যাতিক্রম একটি ঘটনা।

প্রথম এই ব্যাতিক্রমী ঘটনাটি ঘটেছিল চীনেই, ১৯৯৭ সালে। ওই বছর দেশটির সিচুয়ান প্রদেশে প্রথম বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

বিশ্বের বৃহত্তম পোলট্রি উৎপাদন ও রফতানিকারী দেশ চীনে সব সময় বার্ড ফ্লু সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।

তবে ২০২১ সালে চীনে যারা বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে বিস্ময়কর একটি ব্যাপার হলো- ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির পর দেশটির কোনো পোলট্রি খামারে বার্ড ফ্লুর প্রকোপ দেখা যায়নি।

সেক্ষেত্রে এ প্রশ্ন আসা খুবই স্বাভাবিক যে, নতুন এই রোগীরা কীভাবে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলেন।

এ বিষয়ে বিশদভাবে জানতে চীনের কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা চীনা সিডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে সিডিসির কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অবশ্য সংস্থাটির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, নতুন এইচ৫এন৬ ভাইরাসটিকে বার্ডফ্লু ভাইরাসের একটি পরিবর্তিত ধরন বলে বিবেচনা করছে চীনা সিডিসি।

গত মাসে চীনা সিডিসির ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘জিনগত বৈশিষ্টের দিক থেকে অন্যান্য এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জার চেয়ে কিছুটা ভিন্ন বৈশিষ্টের এইচ৫এন৬ অদূর ভবিষ্যতে দেশের পোলট্রি শিল্প ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকির কারণ হয়ে উঠতে পারে।’

এসএমডব্লিউ