সুদানে অভ্যুত্থান: সরকার বিলুপ্ত ঘোষণা, জরুরি অবস্থা জারি
সুদানে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যকে গ্রেফতারের পর দেশটির ক্ষমতাসীন কাউন্সিলের প্রধান ও সেনা কর্মকর্তা আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সার্বভৌম কাউন্সিল এবং সরকার ভেঙে দিয়েছেন তিনি।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, সোমবার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন সরকারকে হটিয়ে সুদানের ক্ষমতা দখলে নিয়েছে সেনাবাহিনী। মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্যকে গ্রেফতারের পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন দেশটির গণতন্ত্রকামী জনগণ। এ সময় বিক্ষোভস্থলে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায় এবং কয়েকজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সেনা কর্মকর্তা আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান দেশটির সার্বভৌম কাউন্সিলের প্রধান। ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গে ক্ষমতার ভাগাভাগি রয়েছে এই কাউন্সিলের।
অভ্যুত্থানের পর দেশটির বেশিরভাগ সরকারি দফতর, মন্ত্রণালয়, গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী। অভ্যুত্থানের পক্ষে বিবৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামদককে প্রথমে গৃহবন্দি, পরে অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে সুদানের তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় বলছে, অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন। রাজধানী খার্তুমে সেনাবাহিনীর সদর দফতরের কাছে বিক্ষোভে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। দেশটির চিকিৎসকদের এক সংগঠন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া বিবৃতিতে বলেছে, বিক্ষোভে গোলাগুলির ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি।
এর আগে উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরোধীরা সামরিক বাহিনীকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেওয়ার আহ্বান জানায়। গত সপ্তাহের শনিবার দেশটির রাজধানী খার্তুমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরোধিতায় বিক্ষোভ থেকে সেনাবাহিনীর প্রতি ওই আহ্বান জানানো হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি সেসময় জানায়, দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ায় কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। ২০১৯ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করার পর সামরিক বাহিনী এবং বেসামরিক গোষ্ঠীগুলো ক্ষমতার ভাগাভাগির মাধ্যমে সুদান শাসন করে আসছে।
কিন্তু গত সেপ্টেম্বরে বশিরের অনুসারী সামরিক কর্মকর্তাদের অভ্যুত্থানের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে দেশটিতে আবারও উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। তখন থেকে সামরিক নেতারা বশিরবিরোধী বিক্ষোভের নেতৃত্বদানকারী বেসামরিক জোট ফোর্সেস অব ফ্রিডম অ্যান্ড চেঞ্জের (এফএফসি) সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। একইসঙ্গে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ গঠন করেন।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস