যে শর্তে ভারতে কোয়ারেন্টাইনমুক্ত থাকবেন বিদেশি পর্যটকরা
চলমান করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বিদেশি পর্যটকদের কোয়ারেন্টাইন নীতিতে পরিবর্তন এনেছে ভারত। বিদেশ থেকে ভারতে যাওয়া যাত্রীদের জন্য কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক নয় বলে দিন কয়েক আগে নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, সোমবার (২৫ অক্টোবর) থেকেই দেশটিতে ভ্রমণরত বিদেশি পর্যটকদের জন্য কোয়ারেন্টাইনের বাধ্যবাধকতা উঠে যাচ্ছে।
সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ওয়ান ইন্ডিয়া। তবে এই সুযোগ পাবেন কেবল করোনা টিকার ডোজ সম্পন্ন করা ব্যক্তিরাই। অর্থাৎ যাদের টিকা নেওয়া সম্পূর্ণ হয়ে গেছে, তাদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার প্রয়োজন নেই। এছাড়া বিমানবন্দরে তাদের রাপিড টেস্ট করা হবে না বলেও জানিয়েছে ভারত সরকার।
বিজ্ঞাপন
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বিদেশী যাত্রীদের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক না হলেও ভারতে প্রবেশের সময় তাদের নেগেটিভ আরটিপিসিআর রিপোর্ট দেখাতে হবে। এছাড়াও ভারতে আসা যাত্রীদের জন্য আরও বেশ কিছু নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
এসব নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেসব বিদেশি পর্যটক করোনাভাইরাস টিকার কেবল প্রথম ডোজ নিয়েছেন; তাদের ক্ষেত্রে ৭ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে এবং অষ্টম দিনে কোভিড টেস্ট করা হবে। টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এলে, তারা হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে বের হতে পারবেন।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এই নতুন নির্দেশনাগুলো আকাশপথে এবং সমুদ্রপথে ভারতে ভ্রমণকারীদের জন্য প্রযোজ্য। সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই নিয়মগুলো কার্যকর থাকবে। বিমানে যাত্রা শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইটে যাত্রীদের কোভিড নেগেটিভের একটি ফর্ম জমা করতে হবে।
তবে এই সুবিধা সব দেশের যাত্রীরা পাবেন না। ভারতের সঙ্গে যে দেশগুলোর টিকা সংক্রান্ত পারস্পরিক সমঝোতা রয়েছে, একমাত্র সেই সব দেশ থেকে আসা যাত্রীরাই শর্ত সাপেক্ষে কোয়ারেন্টাইন এড়াতে পারবেন।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুমোদিত টিকাকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে ১১টি দেশের সঙ্গে ভারতের চুক্তি হয়েছে। এই ১১টি দেশের তালিকায় রয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, নেপাল, বেলারুস, লেবানন, আর্মেনিয়া, ইউক্রেন, বেলজিয়াম, হাঙ্গেরি এবং সার্বিয়া। এই দেশগুলোর যাত্রীরা দু’টি শর্ত মানলে বিমানবন্দর থেকেই মুক্তি পাবেন।
প্রথম শর্ত হল, এই যাত্রীদের বিমানযাত্রার অন্তত ১৫ দিন আগে ডব্লিউএইচও অনুমোদিত দু’টি টিকা নিতে হবে। দ্বিতীয় শর্ত হল, বিমানবন্দরে করোনার আরটিপিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট দেখাতে হবে। এই দু’টি শর্ত মানলে তবেই যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে নিজের গন্তব্যে যেতে পারবেন। যদিও পরবর্তী ১৪ দিন নিজেদের শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রাখতে হবে তাদের।
অবশ্য গত ২০ অক্টোবর এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, ভারত সরকারের নতুন এই নির্দেশনার পরও বেশ কিছু দেশের পর্যটকদের ভারতে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরেই করোনা টেস্ট করাসহ বেশ কিছু বাড়তি নিয়ম-কানুনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো ছাড়াও যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, বাংলাদেশ, বতসোয়ানা, চীন, মরিশাস, নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের নাম রয়েছে।
টিএম