আফগানিস্তানের একটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন একজন শিক্ষক (ফাইল ছবি)

চার মাসেরও বেশি সময় ধরে বেতন পান না আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ হেরাতের শিক্ষকরা। আর তাই বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে একত্রিত হয়ে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রদেশটির শত শত শিক্ষক। স্থানীয় আফগান সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।

আফগান সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার হেরাতের শত শত শিক্ষক জড়ো হয়ে বেতন ছাড়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইসলামিক আমিরাতের কাছে দাবি জানান। ভুক্তভোগী শিক্ষকরা বলছেন, বেতন না পেয়ে তারা তীব্র অর্থনৈতিক দুরাবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

লতিফা আলিজাই নামে এক শিক্ষক বলছেন, ‘আফগানিস্তানে শিক্ষকদের বেতন এমনিতেই কম। আর তাই দুর্দিনে ব্যবহারের জন্য সঞ্চয়ের মতো খুব বেশি অর্থ আমাদের হাতে থাকে না। কেবল দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানো যায়; এমন পরিমাণ অর্থই বেতন হিসেবে আমাদের দেওয়া হতো।’

আফগান সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বেতন না পেয়ে নিজেদের পরিবার নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন শিক্ষকরা। যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ না থাকায় পরিবারের শিশুদের জন্য খাবার ও ওষুধের জোগাড়ও করতে পারছেন না তারা।

নাসির আহমেদ হাকিমি নামে এক স্কুল শিক্ষক বলছেন, ‘টাকার অভাবে অনেক শিক্ষক বিদ্যুৎ বিল দিতে পারছেন না। ফলে আমাদের অনেক শিক্ষকের বাড়িতেই এখন বিদ্যুৎ নেই।’

অন্যদিকে সাদাত আতিফ নামে একজন স্কুল শিক্ষক জানান, ‘গত এক মাস ধরে আমার মেয়ে অসুস্থ। (টাকার অভাবে) আমি তাকে চিকিৎসকের কাছে নিতে পারছি না।’

তোলো নিউজ জানিয়েছে, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী- কমপক্ষে ১৮ হাজার শিক্ষক গত চার মাস ধরে কোনো বেতন পাননি। তাদের মধ্যে ১০ হাজারই নারী শিক্ষক।

শিক্ষক সমিতির প্রধান মোহাম্মদ সাবির মাশাল বলছেন, ‘গত চার মাস ধরে কোনো বেতন পাননি শিক্ষকসহ বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বেঁচে থাকার জন্য তারা এতোদিন তাদের বাড়ি-ঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করছেন। তবে এখন তাদের হাতে বিক্রি করার মতো কিছুই অবশিষ্ট নেই।’

শিক্ষকদের বেতন না পাওয়ার বিষয়টি পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নিয়েছেন হেরাতের শিক্ষা বিষয়ক দফতরের প্রাদেশিক প্রধান শুহাবুদ্দিন সাকিব। তিনি বলছেন, শিক্ষকদেরকে শিগগিরই এক মাসের বেতন দেওয়া হবে।

আফগান কর্মকর্তারা বলছেন, নানামুখী চ্যালেঞ্জের কারণে সম্প্রতি বহু শিক্ষক আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গেছেন।

টিএম