জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় জাতিসংঘের তৈরি গুরুত্বপূর্ণ এক বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন কীভাবে পাল্টে ফেলার চেষ্টা করেছিল; সেবিষয়ে বিশাল নথিপত্র ফাঁস হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির হাতে আসা সেই নথিতে দেখা যায়, যেসব দেশ জলবায়ু সংক্রান্ত জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদন বদলে ফেলতে তদবির চালিয়েছিলেন; তাদের মধ্যে আছে সৌদি আরব, জাপান, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশও।

এমনকি এসব দেশ জাতিসংঘকে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার সিদ্ধান্তও বদলে ফেলার আহ্বান জানিয়েছিল। ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য দরিদ্র দেশগুলোকে দেওয়া অধিক আর্থিক সহায়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল বিশ্বের কিছু ধনী দেশ।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা সংক্রান্ত জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদন বদলে ফেলতে ধনী দেশগুলোর এমন ‘তদবির’ আগামী নভেম্বরের জলবায়ু সম্মেলন কপ–২৬ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।

নথিতে দেখা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কপ–২৬ সম্মেলনের আগে জাতিসংঘ বিশ্বের কাছে যেসব পদক্ষেপের সুপারিশ এবং তাৎপর্যপূর্ণ প্রতিশ্রুতির আহ্বান জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে; সেগুলো বদলে ফেলতে তদবির চালিয়েছিল দেশগুলো।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় জাতিসংঘের তৈরি ওই খসড় প্রতিবেদনে বৈশ্বিক উষ্ণতা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়।

ফাঁসকৃত নথিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, বিভিন্ন কোম্পানি ও অন্যান্য স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষের কাছ থেকে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করার জন্য সর্বোত্তম উপায় খুঁজতে গঠিত বিজ্ঞানী দলের কাছে ৩২ হাজারের বেশি প্রস্তাব জমা পড়ে।

জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক জাতিসংঘের আন্তঃসরকার প্যানেল (আইপিসিসি) প্রত্যেক ছয় থেকে সাত বছর পরপর এ ধরনের মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সেই সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার এই প্রতিবেদন ব্যবহার করে। এবারের জাতিসংঘের ওই খসড়া প্রতিবেদন গ্লাসগোতে অনুষ্ঠেয় বৈশ্বিক জলবায়ুবিষয়ক কপ–২৬ সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।

 এসএস