প্রবল বৃষ্টি-বন্যায় উত্তরাখণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬
ভারতের উত্তলাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডে ব্যাপক বর্ষণ ও তার ফলে সৃষ্ট বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬ জনে পৌঁছেছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
সামাজিক যোগাযোগামধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে পাহাড়-পর্বতে সমৃদ্ধ এই রাজ্যটিতে গত ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট বন্যায় ডুবে গেছে সড়ক, বাড়িঘর। ভেঙে পড়েছে অনেক সেতুও।
বিজ্ঞাপন
ভারতের আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে উত্তরাখণ্ডে যেখানে ৩০ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়, সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যজুড়ে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১২২ দশমিক ৪ মিলিমিটার।
রাজ্যটির রানিখেত ও আলমোড়া জেলা সমতল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া রানিখেতে ডিজেল, পেট্রল, অকটেন ইত্যাদি জ্বালানির অভাব দেখা দিয়েছে। বুধবার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো জরুরি পরিষেবার জন্য জ্বালানি রেশনিং করতে হয়েছে।
রাজধানী দেরাদুন থেকে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার দূরের জেলা রানিখেতে যেটুকু জ্বালানি অবশিষ্ট আছে তা জরুরি পরিষেবার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল করা গেলেও লো-ভোল্টেজের কারণে প্রয়োজনীয় সেবা মিলছে না। বহু জায়গায় ফাইবার অপটিক ক্যাবল বিচ্ছিন্ন হওয়ায় টেলিফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।
দেরাদুন থেকে প্রায় ৩৪৫ কিলোমিটার দূরের আলমোড়ায় বৃষ্টিজনিত বিভিন্ন ঘটনায় সাত জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতের বার্তাসংস্থা এএনআই জানিয়েছে।
পর্বতময় রাজ্যটির কুমায়ুন অঞ্চল ভারি বৃষ্টিপাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। এখানে বহু ঘরবাড়ি ধসে ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক মানুষ চাপা পড়েছেন।
ভারতের জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনী (এনডিআরএফ), সেনাবাহিনী ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলো উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযান পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩০০ জনেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী বাহিনী। রাজ্যজুড়ে উদ্ধারকারী বাহিনীর ১৫ দল সক্রিয় আছে বলে জানিয়েছে ভারতের বার্তাসংস্থা এএনআই।
উত্তরাখাণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে চার লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বন্যায় যাদের ঘরদোর ভেঙে পড়েছে, তাদেরকে ১ লাখ ৯০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এসএমডব্লিউ