১০ দেশের ভ্রমণকারীদের জন্য সীমান্ত খুলছে থাইল্যান্ড
করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বিদেশি পর্যটকদের জন্য সীমান্ত বন্ধ রাখার পর অবশেষে তা আংশিক খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে থাইল্যান্ড। সম্প্রতি এক ভাষণে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চ্যান ওচা।
সোমবার (১১ অক্টোবর) থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ১ নভেম্বর থেকে যুক্তরাজ্য, চীন, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্রসহ মোট ১০ টি দেশের পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে। তবে কেবল সেইসব পর্যটকরাই প্রবেশ করতে পারবেন দেশটিতে, যারা করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন।
বিজ্ঞাপন
ভাষণে প্রায়ুথ চ্যান ওচা বলেন, টিকার সনদের পাশাপাশি এই ১০ দেশের পর্যটকদের জন্য কোভিড নেগেটিভ সনদ রাখা ও তার প্রদর্শনও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে; এবং থাইল্যান্ডে প্রবেশের পর দ্বিতীয়বার করোনা টেস্ট করাতে হবে তাদের।
যদি সেই টেস্টেও নেগেটিভ রিপোর্ট আসে, তাহলেই থাইদের মতো মুক্তভাবে দেশটিতে ঘুরতে পারবেন বিদেশি পর্যটকরা।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ১ ডিসেম্বর থেকে আরো বেশি দেশের যাত্রীদের জন্য পর্যটনের দরজা খুলে দেওয়া হবে। বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র, পানশালা ও অ্যালকোহল বিক্রির দোকানগুলোও খোলা হবে সেদিন।
সোমবারের ভাষণে প্রায়ুথ চ্যান ওচা আরো একটি বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন। পর্যটন শুরু হওয়ার পরে যদি দেখা যায় যে তাতে দেশের সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে, তাহলে ফের পর্যটকদের জন্য দেশের দরজার বন্ধ করে দেওয়া হবে।
পরীক্ষামূলকভাবেই ১ নভেম্বর থেকে পর্যটন শুরু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
থাইল্যান্ডের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। গত দেড় বছরে দেশের অর্থনীতি কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। থাইল্যান্ড সরকারের হিসেব বলছে, গত এক বছরে পর্যটন শিল্প মার খাওয়ায় দেশের ক্ষতি হয়েছে অন্ততপক্ষে পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের প্রথম আট মাসে থাইল্যান্ডে গিয়েছেন মোট ৭০ হাজার বিদেশি নাগরিক। তাদের সবাইকেই থাইল্যান্ডে নেমে ১৪ দিন কোয়ারিন্টাইনে থাকতে হয়েছে। অথচ ২০১৯ সালে এক বছরে চার কোটি পর্যটক গিয়েছিলেন।
এ থেকেই স্পষ্ট- মহামারির প্রভাবে প্রায় ভেঙে পড়ার অবস্থায় পৌঁছেছে দেশটির পর্যটন খাত। এ কারণে দ্রুত পর্যটন শিল্পের উন্নতি করতে চাইছে দেশের সরকার।
এশিয়ার যে দেশগুলো করোনায় সবচেয়ে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে তার মধ্যে থাইল্যান্ড অন্যতম। গত জুলাই থেকে দেশটিতে প্রতিদিন করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
দেশটির স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তথ্য বলছে, থাইল্যান্ডের মোট জনসংখ্যার ৩৩ শতাংশ বা প্রায় ৭ কোটি মানুষ করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন; এবং টিকার একটি ডোজ নিয়েছেন মোট জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষ।
এসএমডব্লিউ