টিকা নিরাপদ, ভয় পাবেন না : মোদি
টিকাদান কর্মসূচি শুরুর সাত দিনে প্রায় ১৩ লাখ মানুষ টিকা নিলেও সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় টিকা নেওয়ার বিষয়ে জনগণকে আশ্বস্ত করে বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
নিজের নির্বাচনী আসন উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে টিকা নেওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথোপকথনের মাধ্যমে মোদি বলেন, ‘করোনার টিকা নিন। এটা নিরাপদ। এ নিয়ে ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই।’
বিজ্ঞাপন
মোদি বলেন, বিজ্ঞানীদের সবুজ সংকেত টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তাই টিকা নিতে অযথা ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে মোদি এমন বার্তা দেওয়ার দিনও ভারতে টিকা নিয়ে ফের মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।
গত ১৬ জানুয়ারি থেকে টিকা নিয়েছেন দেশটির মোট ১২ লাখ ৭২ হাজার ৯৭ জন।
অবশ্য টিকা নিয়ে মৃত্যুর ব্যাপারে সরকারিভাবে মুখ খোলেনি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনও এর আগে টিকার সুরক্ষার কথা জানিয়ে দেশের মানুষকে টিকা নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন।
বিরোধীদের উদ্দেশে কিছুটা পরোক্ষ আক্রমণ করে মোদি বলেন, ‘টিকা কেন আসছে না, সেই প্রশ্ন তুলে প্রথমে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সরকার জানিয়েছিল, টিকা নিয়ে বিজ্ঞানীদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তাই মেনে চলা হয়েছে।’
করোনার টিকা নিয়ে ভয় ও ভুল ধারণা ভেঙে বেরিয়ে আসার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন ‘যখন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কোনো টিকার ‘ক্লিনচিট’ দেন, তখন তা জনমনে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেয়।’
ভারতে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ২ লাখ ২৮ হাজার ৫৬৩ জন টিকা নিয়েছে।
গত শনিবার থেকে দিনে তিন লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ভারতে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হলেও সেই সংখ্যা কোনো দিনও ছোঁয়া যায়নি। প্রথম ধাপে দেশটি স্বাস্থ্যকর্মী ও ফ্রন্টলাইন কর্মীদের টিকা দিচ্ছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, শুক্রবার দেশজুড়ে টিকা নিয়েছে ২ লাখ ২৮ হাজার ৫৬৩ জন। এ নিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি থেকে টিকা নিয়েছেন দেশটির মোট ১২ লাখ ৭২ হাজার ৯৭ জন।
মৃত্যুর সঙ্গে টিকা নেওয়ার বিষয়টি জড়িত কিনা, মরদেহের ময়নাতদন্তের আগে তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
টিকা নিয়ে শুক্রবারও ২৬৭ জনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানা গেছে। একজনের মৃত্যুর খবরও জান যাচ্ছে। গত শনিবার টিকা নেওয়ার পর ৫৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি শনিবার সকালে ঘুমের মধ্যে মারা যান।
তবে তার মৃত্যুর সঙ্গে টিকা নেওয়ার বিষয়টি জড়িত কিনা, মরদেহের ময়নাতদন্তের আগে তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা। তবে এই ঘটনার বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা করছেন তারা।
ভারতে প্রথম অনুমোদন পাওয়া দুটি টিকার মধ্যে ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তিনটি ধাপ শেষ হওয়ার আগেই ব্যবহারের ছাড়পত্র পেয়ে যাওয়ায় সেটির কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়।
অনেক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী ‘কোভ্যাকসিন’ টিকা নিতে আপত্তি জানানোয় ভারতের টিকাদান কর্মসূচির জন্য সরকারের নেওয়া লক্ষ্যমাত্র পূরণ করা যাচ্ছে বলে মনে করছেন শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
দিল্লির মতো কিছু বিরোধী রাজ্য ইতোমধ্যে অভিযোগ তুলেছে, পরিকল্পিতভাবে কেন্দের তরফ থেকে তাদেরকে অক্সফোর্ড উদ্ভাবিত ও সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড না পাঠিয়ে কোভ্যাকসিন টিকা পাঠানো হয়েছে।
এ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা, সব রাজ্যেই ধাপে ধাপে দুই ধরনের টিকা যাবে। কারণ এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে টিকার জোগানের ওপর। মোদিও এ নিয়ে বলেন, কোথায় কোন টিকা দেওয়া হবে, তা নিয়ে রাজনীতি হয়নি।
এএস