‌‘মু‌সলিমদের পূর্বপুরুষরা গোমাংস খেতেন না’ বলে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন ভারতের বিজেপিশাসিত প্রদেশ আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। শনিবার দেশটির ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ওই মন্তব্য করেছেন তিনি।

আসামের ধর্মস্থান এলাকায় গরুর গোশত নিষিদ্ধের বিষয়ে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘আসামের অধিকাংশ মুসলিম ধর্মান্তরিত, তাদের পূর্বপুরুষরা গরুর গোশত খেতেন না। এটা যদি তাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয় যে, আপনাদের পূর্বপুরুষরা গরুর গোশত খাননি, আপনারা অন্তত এর ব্যবহারকে উৎসাহিত করবেন না, তাহলে এতে ভুল কোথায়?’      

তিনি বলেন, ‘যারা এখন মুসলিম, তাদের দাদা, পরদাদা গরুর গোশত খাননি। যদি আমি তাদের পারিবারিক ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে দিই যে, আপনাদের পূর্বপুরুষরাও এটা করেননি। আপনারা এটা করতে পারেন, কিন্তু আমাদের মন্দিরের আশপাশে করবেন না, তাহলে এতে দোষের কী?’

আসামের এই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আসামের মুসলিমরা ধর্মীয় স্থানের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে গরুর গোশত ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞায় খুশি এবং এতে সম্প্রীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনারা কী দেখেছেন আসামের কোনও মুসলিম সংগঠন গরুর গোশত খাওয়ার নতুন নিয়মের বিরোধিতা করেছে? এ সংক্রান্ত প্রতিবাদ শুধুমাত্র বাম উদারপন্থীরা করে থাকে।’ 

আসামে অবৈধ দখলদারি উচ্ছেদের প্রশ্নে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘অবৈধ দখল অপসারণের সময় যাদের অপসারণ করা হয়েছিল তাদের অধিকাংশের ‘সন্দেহজনক নাগরিকত্ব’ ছিল; কিন্তু নাগরিকত্ব সন্দেহজনক হওয়ায় তাদের সরানো হয়নি। তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল কারণ এটি ৭৭ হাজার একর জমি, এবং এটি শুধুমাত্র ১ হাজার পরিবার দ্বারা দখল করা হয়েছে। আসামে আমাদের একটি নিয়ম আছে, একটি পরিবার মাত্র দুই একর জমির মালিক হতে পারে। সুতরাং এভাবে এই পরিবারগুলো রাখতে পারে মাত্র ২ হাজার একর জমি। তাহলে বাকি ৭৫ হাজার একর জমির কী হবে?’

সম্প্রতি আসামের দরং জেলার ধোলপুরে তথাকথিত অবৈধ দখলদারি উচ্ছেদের সময় স্থানীয়রা বাধা দিলে পুলিশের গুলিতে দু’জন মুসলিম বাসিন্দা নিহত হয়। উচ্ছেদ হয় সংশ্লিষ্ট এলাকার মুসলিম বাসিন্দারা। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটি আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে আসামের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

এসএস