‘দুই আঙুলে নয়, তিন আঙুলে জয়ের চিহ্ন দেখাবো’
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের পর তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি দুই আঙুলে জয়ের চিহ্ন দেখাবেন না। গত বৃহস্পতিবার শেষ হওয়া এ উপনির্বাচনের ভোটগণনায় ৫৮ হাজারেরও বেশি ভোটে তিনি জয় পেয়েছেন। রোববার সকাল থেকে ভোটগণনা শুরু হওয়ার পর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে বিজেপির প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের সঙ্গে মমতার ব্যবধান।
বহুল আলোচিত এই নির্বাচনে জয় নিশ্চিত হওয়ার পর মমতা বলেন, আমি দুই আঙুলে জয়ের চিহ্ন দেখাব না। তিন আঙুলে জয়ের চিহ্ন দেখাব। কারণ আমরা তিন জায়গায় জিতেছি।
বিজ্ঞাপন
ভবানীপুরের ভোটারদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, কোভিড এবং বৃষ্টি সামলে মানুষ যেভাবে ভোট দিয়েছেন; তাতে আমি কৃতজ্ঞ। তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসা মমতা বলেন, সমস্ত ভাষার মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছেন। সব ক’টি ওয়ার্ডে আমি বেশি ভোট পেয়েছি। এই প্রথম এমন হলো। ভবানীপুরের মানুষ গোটা দেশকে দেখিয়ে দিল বাংলা কাকে চায়।
পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, মমতার ভাগ্য নির্ধারণী আসন ভবানীপুর ছাড়াও জঙ্গিপুর ও শমসেরগঞ্জ আসনে উপনির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। এতে পঞ্চদশ রাউন্ডের গণনা শেষে জঙ্গিপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী জাকির হোসেন পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৭১৪ ভোট। অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী সুজিত দাস পেয়েছেন ২৫ হাজার ১৮৩ ভোট। ব্যবধান ৫২ হাজার ৫৩১।
এছাড়া শমসেরগঞ্জে তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম পেয়েছেন ৫৯ হাজার ২০৫ ভোট। কংগ্রেসের জাইদুর রহমান পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৮৩০ ভোট। বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন ৫৪৩৭ ভোট। আমিরুলের ভোটের ব্যবধান ১০ হাজার ৩৭৫।
ভবানীপুরে জয়ের পর রাজ্যের আরও চার উপনির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করেছেন মমতা। এই চার আসন হলো, শান্তিপুর, গোসাবা, দিনহাটা, খড়দহ। খড়দহে উপনির্বাচন প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। শান্তিপুরে ব্রজকিশোর গোস্বামী। দিনহাটায় উদয়ন গুহ। গোসাবায় বাপ্পাদিত্য নস্কর এবং সুব্রত মণ্ডলের মধ্যে যে কোনও একজন প্রার্থী হবে বলে জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রাখতে ভবানীপুরের এই উপনির্বাচনে জয়ের বিকল্প ছিল না মমতার। কারণ গত এপ্রিল-মে মাসে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনের নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন মমতা। ভারতের নির্বাচনী বিধি বলছে, কোনও জনপ্রতিনিধি ভোটে হেরে পদে আসীন হতে গেলে তাকে ছয় মাসের মধ্যে ফের নির্বাচনে জয়ী হতে হয়।
দল বিপুল ভোটে জয়লাভ করার পর গত ৫ মে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তৃণমূলনেত্রী। তবে শপথের মেয়াদ ৪ নভেম্বর শেষ হচ্ছিল মমতার। তার আগেই উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নিজের পুরোনো কেন্দ্র ভবানীপুরেই প্রার্থী হন মমতা। তার বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল এবং সিপিএম প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাস। ৩০ সেপ্টেম্বর ভোট হয়। ভোটের ফল প্রকাশ হয় ৩ অক্টোবর। ৫৮ হাজার ৮৩২ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হলেন মমতা।
এসএস