তাইওয়ানের আকাশসীমায় এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটিয়েছে চীন। অবশ্য তাইওয়ানও বসে থাকেনি, অনুপ্রবেশকারী চীনা বিমানবহরকে ধাওয়া দিয়ে নিজ আকাশসীমা থেকে ‘তাড়িয়ে’ দিয়েছে চীনের দখলকৃত স্বাধীনতাকামী এই অঞ্চল।

শনিবার তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কে বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুক্রবার তাইওয়ানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় অংশ পারাতাস দ্বীপপুঞ্জ এবং তাইওয়ান-ফিলিপাইনের সীমান্তবর্তী বাশি প্রণালীর আকাশে মোট ২৫ টি যুদ্ধ বিমানকে টহল দিতে দেখা গেছে।

বাশি প্রণালী কৌশলগতভাবে চীনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর এক তীরে তাইওয়ান, অপর তীরে ফিলিপাইন। পাশপাশি, এই প্রণালী সম্প্রতি আলোচনায় থাকা দক্ষিণ চীন সাগরকে যুক্ত করেছে প্রশান্ত মহাসাগরের সঙ্গে। 

চীনের এই যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে ১৮ টি জে-১৬ ও ৪ টি এস-৩০ ফাইটার জেট, পারমাণবিক বোমা পরিবহনে সক্ষম দু’টি এইচ-৬ বম্বার জেট একটি সাবমেরিন বিধ্বংসী সামরিক উড়োজাহাজ ছিল বলে জানিয়েছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

শনিবারের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আকাশ সীমায় অনুপ্রবেশের সংবাদ পাওয়ার পরই তৎপরতা শুরু করে তাইওয়ানের বিমানবাহিনী। বাহিনীর বেশ কয়েকটি মিসাইলবাহী যুদ্ধবিমান ধাওয়া দিয়ে তাইওয়ানের আকাশসীমা থেকে বের করে দেয় চীনের বিমানবহরকে। বর্তমানে তাইওয়ানের বিভিন্ন অঞ্চলের আকাশসীমা বিমান বাহিনীর নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর আগে সর্বশেষ চলতি বছর জুনে তাইওয়ানের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করেছিল চীনের বিমান বাহিনীর সামরিক উড়োজাহাজ।

চীন বরাবরই তাইওয়ানকে নিজেদের অধিভুক্ত প্রদেশ হিসেবে দাবি করে আসছে; এবং এই দাবিকে শক্তিশালী করতে তাইওয়ানের ওপর রাজনৈতিক ও সামরিক চাপ প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে চলছে দেশটি।

কিন্তু এক সময়ের সার্বভৌম দেশ তাইওয়ান বরাবরই চীনের এই দাবি অস্বীকার করে নিজেদের স্বাধীনতার পক্ষে অনড় অবস্থানে থেকেছে।

তবে চীনের শুক্রবারের অনুপ্রবেশের জন্য তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক একটি উক্তি দায়ী বলে মনে করছেন ওই অঞ্চলের রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

বৃহস্পতিবার তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ সমাজতান্ত্রিক চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাও সে তুংকে একজন ‘উগ্র’, ‘নিষ্ঠুর’ ও ‘অপরিণামদর্শী’ নেতা হিসেবে করেছিলেন।

তার একদিন পরই তাইওয়ানের আকাশে অনুপ্রবেশ করেছে চীনের যুদ্ধবিমান।

সূত্র : আল জাজিরা

এসএমডব্লিউ