নতুন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হোয়াসং-৮ এর এই ছবিটি প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়ার গণমাধ্যম

নতুন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের কথা জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। হোয়াসং-৮ নামের এই ক্ষেপণাস্ত্রটি মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটি।

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে বেশি গতিতে ছুটতে পারে এবং বায়ুমন্ডলের মধ্যে চলমান অবস্থাতেও গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে।

এর আগে উত্তর কোরিয়া তাদের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল বরাবর সমুদ্রে একটি স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে মঙ্গলবার অভিযোগ করে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী। এমন সময় এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার অভিযোগ সামনে আসে যখন উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত জাতিসংঘে আত্মরক্ষার জন্য পিয়ংইংয়ের অস্ত্র পরীক্ষার অধিকার রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নতুন এই হাইপারসনিক মিসাইলটি দেশটির ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি’ অস্ত্রের একটি। সামরিক উন্নয়নের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই মিসাইল তৈরি করা হয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার গণমাধ্যমগুলোতে নতুন এই হাইপারসনিক মিসাইলকে ‘কৌশলগত অস্ত্র’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। সাধারণভাবে এটির অর্থ দাঁড়ায়, মঙ্গলবার সফলভাবে পরীক্ষা চালানো এই ক্ষেপণাস্ত্রের পারমাণবিক সক্ষমতা রয়েছে।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কড়া নিষেধাজ্ঞা ও বিধিনিষেধ সত্ত্বেও একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। বিধিনিষেধের মধ্যেও পিয়ংইয়ংয়ের অস্ত্র প্রযুক্তি ক্রমেই বাড়ছে। মঙ্গলবারের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা সেটিরই ইঙ্গিত।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা কেসিএনএ বলছে, ‘নতুন এই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র সকল দিক দিয়ে আমাদের আত্মরক্ষার সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে।’

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মার্কিন সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা উত্তর কোরিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে অবগত আছে, তবে এটা কোনো মার্কিন সৈন্য বা তাদের মিত্রদের প্রতি তাৎক্ষণিক কোনো হুমকি সৃষ্টি করেনি।

অবশ্য মঙ্গলবার জাপানের গণমাধ্যম দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে বলে, উত্তর কোরিয়ার নিক্ষেপ করা মিসাইলটি হয়তো কোনো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। যার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর উত্তর কোরিয়ার দূত কিম সং নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য দেন। তিনি সেখানে বলেন, উত্তরের অস্ত্র ‘উন্নয়ন, পরীক্ষণ, উৎপাদন এবং সংরক্ষণের’ অধিকার আছে। তিনি আরও বলেন, তার দেশ ‘নিজেকে রক্ষার উদ্দেশে জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ছে’।

উল্লেখ্য, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি গতিতে ছুটতে পারে। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপনের পর খুব দ্রুত উপরে উঠে আবার দ্রুত নেমে আসে। এরপর আনুভূমিকভাবে বায়ুমন্ডলের মধ্যেই চলতে থাকে এবং চলমান অবস্থাতেও গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে, যা ব্যালিস্টিক মিসাইল থেকে ভিন্ন।

টিএম