লন্ডনে বিক্রি হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের বাড়ি, ঠেকাতে পারেননি মমতা
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত একটি বাড়ি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এই বাড়িতে বসেই নোবেলজয়ী সাহিত্য গীতাঞ্জলি’র ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন কবি। যার ফলে ভারত তথা সমগ্র বাঙালির ঘরে আসে প্রথম নোবেল পুরস্কার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ১৯১২ সালে লন্ডন সফরের সময় টানা কয়েক মাস এই বাড়িতেই ছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এখানেই সেসময় বিশ্বকবি ১০৩টি কাব্যের অনুবাদ করে নোবেল কমিটিকে পাঠিয়েছিলেন। এরপরের বছরই অর্থাৎ ১৯১৩ সালেই গীতাঞ্জলির জন্য নোবেল পুরস্কার পান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তারপরও ১৯৩১ সাল পর্যন্ত এই বাড়িতেই অনেকটা সময়ই কাটিয়েছিলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
২০১৫ সালে লন্ডনে গিয়ে বাড়িটি দেখে সরকারিভাবে তা কিনে নেওয়ার জন্য ভারত সরকারকে চিঠি লিখেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, হেরিটেজ সম্পত্তি হওয়ায় সেসময় তা কেনা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সম্পত্তিটি ব্যক্তিগত হাতে চলে যাওয়ায় বিক্রির করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বর্তমান মালিক।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে দু’বার বাড়িটি কিনে নিয়ে যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্য মমতা অনুরোধ জানালেও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া দেওয়া হয়নি। মমতা সেসময় বাড়িটিকে রবীন্দ্রনাথের স্মারক সংগ্রহশালা হিসেবে রূপান্তরের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
এদিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত এই তিন বেডরুমের বাড়িটি বর্তমান মালিক বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এর দাম উঠেছে ২৭ লাখ পাউন্ড অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ২৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড হিথে অবস্থিত এই বাড়িটি বিক্রির দায়িত্বে রয়েছেন ইউরোপিয়ান কোম্পানি গোল্ডস্মিথ অ্যান্ড হাওল্যান্ড।
এতোদিন ওই বাড়িটি হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও হেরিটেজ ট্রাস্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তা আর বাড়ানো হয়নি। ফলে ১৮৬৩ সালে তৈরি এই ভিক্টোরিয়ান ভিলা ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়।
ইউরোপিয়ান কোম্পানি গোল্ডস্মিথ অ্যান্ড হাওল্যান্ড’র ডিরেক্টর ফিলিপ গ্রিন জানিয়েছেন, ‘আমাদের দিক থেকে চিন্তা করলে, আমরা (সম্পত্তি) বিক্রির মাধ্যমে ব্যবসা করে থাকি। আর তাই ব্রিটিশ আইন মেনে কোনো গ্রাহক যদি এই বাড়িটি নিতে চান এবং যথাযথ মূল্য দেন; তাহলে আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাবো।’
তিনি আরও বলছেন, খুবই সুন্দর এই বাড়িটি লন্ডনের মনোরম একটি এলাকায় অবস্থিত এবং সেটি বিক্রির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব আমরা পেয়েছি। এই বাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্বও অনেক বেশি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড
টিএম