টেক্সাসের সীমান্ত শহর ডেল রিও-তে একটি সেতুর নিচে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে এভাবেই অবস্থান করছেন অভিবাসীরা

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের সীমান্ত শহর ডেল রিও থেকে হাইতির অভিবাসী নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দূত ড্যানিয়েল ফুট। শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, সিনিয়র কূটনীতিক ও হাইতিতে নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দূত ড্যানিয়েল ফুট পদত্যাগপত্রে জানিয়েছেন- ২০১০ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্প ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে হাইতি থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়া অভিবাসীদের জোর করে ফেরত পাঠানো ‘অমানবিক’।

তিনি আরও বলেন, হাইতির হাজার হাজার শরণার্থী ও অবৈধ অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানোর এই অমানবিক সিদ্ধান্তে আমি যুক্ত হতে চাই না। তার ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্রের হাইতি সংক্রান্ত নীতি ত্রুটিপূর্ণ এবং হাইতির নাগরিকদের ব্যাপারে ইতোপূর্বে করা তার সুপারিশ উপেক্ষা করা হয়েছে।

গত সপ্তাহের শেষের দিক থেকে টেক্সাসের সীমান্ত শহর ডেল রিও থেকে বহু অবৈধ অভিবাসীকে বিমানে করে হাইতিতে ফেরত পাঠানো শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে একটি সেতুর নিচে অস্থায়ী একটি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ১৩ হাজার অভিবাসী অবস্থান নিয়েছিলেন। বিবিসি জানিয়েছে, আশ্রয় নেওয়া এসব অভিবাসীদের জন্য খাবার এবং স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছে, হাইতির কয়েক হাজার অভিবাসীকে ৬০ দিনের মধ্যে অভিবাসন প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে এরপরও গত বুধবার বিমানে করে টেক্সাস থেকে হাইতিতে পাঠানো হয় বহু অভিবাসীকে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্বাস্থ্য-বিধি অনুযায়ী হাইতির অভিবাসীদের সীমান্ত থেকে যতো দ্রুত সম্ভব তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ফেরত পাঠানো অভিবাসীরা আশ্রয় প্রার্থনার সুযোগ পাচ্ছেন না। তবে অনেককেই নিবন্ধনের এবং অন্তত কয়েক সপ্তাহ যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি মেক্সিকো থেকে হাইতির প্রায় ১৪ হাজার নাগরিক টেক্সাসের সীমান্ত শহর ডেল রিওতে এসেছেন। তবে কেন তাদের অনেককে জোর করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে আবার অনেককে ফেরত না পাঠিয়ে কেন অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

২০১০ সালে হাইতির ভূমিকম্পের পর সেখান থেকে পালিয়ে চিলি, ব্রাজিলসহ দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশে বসবাস করছেন বহু অভিবাসী। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত খোলা রয়েছে, সামাজিক মাধ্যমের এমন প্রচারণার খবরে তারা টেক্সাসের ডেল রিও সীমান্তে আসতে থাকেন।

প্রতিটি ফ্লাইটে ১৩৫ জনকে নিয়ে বুধবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৫টি ফ্লাইট হাইতির রাজধানী পোর্ট-অব-প্রিন্স ও ক্যাপ-হাইতিয়েনে যায়। বৃহস্পতিবার যায় মোট সাতটি ফ্লাইট। গত রোববার থেকে এক হাজারেরও বেশী অভিবাসীকে হাইতিতে ফেরত পাঠানো হয়েছে যাদের অনেকেই প্রায় এক দশক ধরে দেশটিতে থাকতেন না।

টিএম