ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্পূর্ণ যোগ্যতা রাখেন বলে মন্তব্য করেছেন  বিজেপি থেকে সদ্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া বাবুল সুপ্রিয়।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ২০২৪ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান তিনি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যান্য কর্মী ও সমর্থকরা।

সোমবার ভারতের বার্তাসংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘আমরা চাই, আমাদের দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী ২০২৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবেন। ভারতের আগামী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য যারা বর্তমানে দৌড়ে আছেন, তাদের সবার মধ্যে মমতা ব্যানার্জী সবচেয়ে যোগ্য এবং সবাই এটি স্বীকার করবে।’

ভারতে আগামী লোকসভা নির্বাচন হবে ২০২৪ সালে। সেই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি বিরোধী জোটের প্রধান মুখ কে হবেন- তা নিয়ে বর্তমানে আলোচন চলছে ভারতের বিরোধী শিবিরের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে।

এতদিন পর্যন্ত বিজেপিবিরোধী আন্দোলনের প্রধান মুখ হিসেবে ধরা হতো কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীকে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সর্বশেষ বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল বিজয়ের পর ভারতের অনেক রাজনৈতিক দলই রাহুল গান্ধীর পরিবর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘বিজেপি হটাও’ আন্দোলনের প্রধান নেত্রী হিসেবে দেখতে চাইছে।

গত শনিবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সেই যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন।

অবশ্য তৃণমূলে যোগদানের মাস দেড়েক আগে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি।

দলবদল সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে বাবুল বলেন, ‘ব্যাপারটি এমন নয় যে দলবদল করে আমি কোনো ইতিহাস সৃষ্টি করেছি। আমার আগে প্রচুর নেতা দলবদল করেছেন। গত বিধানসভা নির্বাচনেই এক ঝাঁক নেতা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, আবার অনেকে বিজেপি থেকে তৃণমূলেও এসেছেন।’

‘বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের একাংশ দলের প্রতি ক্ষুব্ধ। দলটির উচিত, তাদের অসন্তোষের ব্যাপারটি মিটমাটের উদ্যোগ নেওয়া।’

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিজেপি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগের পর রাজনীতি থেকে মন উঠে গিয়েছিল; কিন্তু এমন সময়ে দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমায় বললেন, এখনও আমার সামনে দেশ ও জনগণকে সেবা করার সুযোগ আছে।’

‘এটি ছিল আমার জন্য একটি অভূতপূর্ব ব্যাপার। আমি খুবই আনন্দিত তৃণমূল পরিবারের অংশ হতে পেরে।’

তবে দল ও মন্ত্রীত্ব ছাড়লেও এখনও ভারতের কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল আসনের প্রতিনিধিত্ব করছেন বাবুল সুপ্রিয়। সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, পার্লামেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তা চালিয়ে যাবেন তিনি।

‘আমি এখনও আসানসোলের এমপি এবং পার্লামেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালন করে যাব। তবে এখানে জানিয়ে রাখি, লোকসভার এমপি হিসেবে দিল্লিতে আমার জন্য যে বাংলো বরাদ্দ ছিল, প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর তা আমি ছেড়ে দিয়েছি।’

‘এবং প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আমাকে যে নিরাপত্তা দেওয়া হতো, সেটিও প্রত্যাহার করে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছি এবং তা গৃহীত হয়েছে।’

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

এসএমডব্লিউ