বলসোনারোর অভিশংসনের দাবিতে ব্রাজিলে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর অভিশংসনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে দেশটিতে। রোববার ব্রাজিলের ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন।
বার্তাসংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ব্রাজিলের বৃহত্তম শহর রিও ডি জেনেরিও, সাও পাওলো, বেলো হরাইজনেটসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ব্রাজিলের রক্ষণশীল বা ডানপন্থি সামাজিক সংস্থা মুভিমেন্টো ব্রাসিল লিভরে (এমবিএল) এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ২০১৬ সালে ব্রাজিলের বামপন্থি প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফের বিরুদ্ধেও আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল এমবিএল।
আগামী বছর ব্রাজিলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে বলসোনারোর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দেশটির বাম ঘরানার সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাকিও লুলা দা সিলভা। তবে এমবিএলের নেতারা জানিয়েছেন, তারা লুলা দা সিলভার সমর্থনে এই বিক্ষোভের ডাক দেননি।
বিক্ষোভে এমবিএলের স্লোগান ছিল- ‘বলসোনারোও নয়, লুলাও নয়’।
এমবিএলের অন্যতম নেতা ও পেশায় প্রোকৌশলী ইভেতে রামালহো এএফপিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখানে আমরা কেউই বলসোনারো বা লুলার সমর্থন করছি না। তবে বলসোনারোর বিষয়ে আমরা শঙ্কিত। দেশে সংঘাত বাড়ানো ব্যতীত গত পাঁচ বছরে তিনি ব্রাজিল এবং তার জনগণের জন্য কিছুই করেননি।’
তবে এমবিএল যাই বলুক, সম্প্রতি শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে ব্যাপকভাবে যোগ দিয়েছেন লুলা দা সিলভার সমর্থকরা। রোববার যেসব শহরে বিক্ষোভ হয়েছে, তার সবগুলোতেই তাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা সবার গায়ে ছিল ‘লুলা ২০২২’ লেখা টি শার্ট।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় চরম ব্যর্থতা, দুর্নীতি, রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজন উস্কে দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে বলসোনারোর বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের জেরে গত জুলাই থেকেই তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে ব্রাজিলে।
এর আগে ব্রাজিলের পার্লামেন্টেও তার বিরুদ্ধে অভিংশসনের দাবি উঠেছিল। কিন্তু সে সময় পার্লামেন্টে তার দলের সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুবিধা নিয়ে সেই ফাঁড়া কাটিয়েছিলেন তিনি।
কয়েক মাস আগে নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যাবহারের পরিবর্তে ব্যালট পেপার ব্যবহার হবে বলে অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন বলসোনারো। অধ্যাদেশের পক্ষে তার যুক্তি ছিল- ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট কারচুপির সুযোগ রয়েছে।
কিন্তু সম্প্রতি ব্রাজিলের নির্বাচনী আদালত তার যুক্তিকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে সেই অধ্যাদেশ বাতিল ঘোষণা করার পর থেকে আদালত ও বিচারবিভাগের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে বলসোনারোর।
এদিকে, দেশে পরিচালিত একাধিক জরিপে জানা গেছে, নির্বাচনী দৌড়ে বলসোনারোর চেয়ে এগিয়ে আছেন লুলা দা সিলভা, যিনি ২০০৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
সূত্র : এএফপি
এসএমডব্লিউ