মার্কিন নাগরিকসহ আনুমানিক ২০০ যাত্রী নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দর ছেড়েছে একটি ফ্লাইট। আফগানিস্তান তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর তাদের অধীনে রাজধানী কাবুল থেকে ছেড়ে যাওয়া এটিই প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে টানা দুই সপ্তাহের বিশৃঙ্খল উদ্ধার অভিযান শেষ হওয়ার পর গত ৩১ আগস্ট বিমানবন্দরটির দায়িত্ব নেয় তালেবান। এরপর থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত কাবুল থেকে কোনো ফ্লাইট ছেড়ে যায়নি।   

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী কাতারের ব্যবস্থাপনায় চলা বিশেষ এই ফ্লাইটটির গন্তব্য দোহা। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রায় ২০০ যাত্রী নিয়ে কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটটি কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। এর আগে আফগানিস্তানে আটকে পড়া বিদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরার অনুমতি দেয় তালেবান সরকার। 

পরিবারকে সাথে নিয়ে কাতার এয়ারওয়েজের ওই ফ্লাইটের অপেক্ষায় থাকা একজন আফগান-আমেরিকান নাগরিক এএফপিকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে আমি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর থেকে ফোন পাই। ফোন করে আমাকে বিমানবন্দরে যাওয়ার কথা বলা হয়।’ তবে নাম জানতে চাইলে নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি এএফপিকে তার পরিচয় দেননি। 

তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর প্রতিহিংসার শিকার হয়ে ভয়ে অনেক আফগান, বিশেষ করে যারা যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর হয়ে কাজ করেছেন, তারা মরিয়া হয়ে বিমানবন্দরের দিকে ছুটতে শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্রও তাদের নাগরিকদের সঙ্গে আফগান সহযোগীদের নিতে শুরু করে। তখন কাবুল বিমানবন্দরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।  

এমন পরিস্থিতির মধ্যে বিমানবন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ সেনা এবং ১৭০ জন আফগান প্রাণ হারান। আহত হয় আরও বহু মানুষ। পরে বিমানবন্দরে ভয়াবহ সেই হামলার দায় স্বীকার করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগানিস্তান শাখা ইসলামিক স্টেট অব খোরাশান প্রভিন্স বা আইএস-কেপি।

এরপর যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ উদ্ধার কার্যক্রমের গতি আরও বাড়িয়ে দেয়। গত ৩০ আগস্ট মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ সেনা একটি সামরিক বিমানে ওঠার মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ দুই দশকের যুদ্ধ তথা সামরিক আগ্রাসনের সমাপ্তি ঘটে। বিজয় উদযাপন করে কাবুলের মসনদে বসে তালেবান। গত মঙ্গলবার তালেবান সরকার ঘোষণা করেছে।

তালেবান সরকার ঘোষণার পর কাতার কাবুল বিমানবন্দর সচল করার জন্য সব রকমের চেষ্টা চালাতে থাকে। দোহার ব্যবস্থাপনায় সম্প্রতি কাবুল বিমাবন্দরে পৌঁছায় বিমানবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি দল। ওই দলের অধীনে কাবুল বিমানবন্দর আবার সচল করে দেওয়া হলো। কাতার জানিয়েছে, ধীরে ধীরে কাবুল বিমানবন্দরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।  

এএস/জেএস