খাবারের দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা
খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং তীব্র ঘাটতির মধ্যে মজুত প্রতিরোধে শ্রীলঙ্কায় জারিকৃত জরুরি অবস্থায় অনুমোদন দিয়েছে দেশটির সংসদ। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
তবে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের বিরোধী আইনপ্রণেতারা বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে জরুরি অবস্থা জারি না করে অন্যান্য আইনও ব্যবহার করার সুযোগ ছিল। তাদের অভিযোগ— জরুরি অবস্থা চলার সময় সরকারের সমালোচকদের দমনের ক্ষেত্রে কঠোর জরুরি আইন ব্যবহৃত হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
আলজাজিরা বলছে, জরুরি আইন জারির ফলে দেশটির সরকারি কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের পরোয়ানা ছাড়াই মানুষকে গ্রেফতার ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি অনুমতি ছাড়া যেকোনো স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি চালানোর ক্ষমতা পাবে। এছাড়া নিয়মিত আইন স্থগিত করে যেকোনো আদেশ জারি করতে পারবে এবং এটি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থও হওয়া যাবে না।
যারা এ ধরনের কোনো আদেশ দেবেন তাদের বিরুদ্ধেও কোনো ধরনের মামলা করা যাবে না। গত ৩০ আগস্ট শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকশে।
জরুরি অবস্থা জারি করার পর ১৪ দিনের মধ্যে পার্লামেন্ট থেকে তা অনুমোদন করিয়ে নেওয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে এ বিষয়ে লংকান সংসদে ভোটাভুটি হয়। এতে জরুরি অবস্থা জারির পক্ষে ১৩২টি এবং বিপক্ষে ৫১টি ভোট পড়ে। ২২৫ আসনের শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে সরকারি দলের আসন রয়েছে ১৫০টিরও বেশি।
ডলারের বিপরীতে নিজস্ব মুদ্রা শ্রীলঙ্কান রুপির দাম পড়ে যাওয়ায় বাড়তে থাকা খাদ্যদ্রব্যের মূল্যের লাগাম টানতে এই জরুরি অবস্থা জারি করেন দেশটির পেসিডেন্ট। এ বিষয়ে গঠিত সরকারি কমিশন গত সপ্তাহ থেকে কাজও শুরু করে দেয়। চলতি বছর ডলারের বিপরীতে শ্রীলঙ্কান রুপির মূল্য কমেছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আগস্টের আগ পর্যন্ত এই হার ছিল ৬ শতাংশ।
ব্যাপক এই মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবে চলতি বছরের শুরু থেকেই বাড়ছে চাল-আটা-চিনি-তেল-গুঁড়ো দুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব খাদ্যদ্রব্যের দাম। আগস্ট মাস থেকে তা প্রায় লাগামহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। এছাড়া কেরোসিন ও রান্নার কাজে ব্যবহার্য গ্যাসের দামও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।
কর্মকর্তারা বলছেন, শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম বড় ও গুরুত্বপূর্ণ খাত হলো পর্যটন। করোনা মহামারির কারণে এই খাত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এর ফলে দেশটির অর্থনীতি গত বছর সংকুচিত হয়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রা মজুত রক্ষার্থে গত বছর থেকে মোটরগাড়ি ও বিলাসজাত পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে শ্রীলঙ্কার সরকার।
টিএম/জেএস