খুব শিগগিরই প্রতি সপ্তাহে বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃত্যু এক লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সোমবার জেনেভায় এক বৈঠকে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংস্থাটির ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের নির্বাহী পরিচালক মাইক রায়ান।

তিনি বলেছেন, গত সপ্তাহে বিশ্বে করোনায় মারা গেছেন ৯৩ হাজারের বেশি মানুষ। সামনের দিনগুলোতে প্রতি সপ্তাহে বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা এক লাখ ছাড়াতে পারে। 

করোনাভাইরাস মহামারির হালনাগাদ তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী বোর্ডের কাছে তুলে ধরে মাইক রায়ান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে করোনায় মৃতদের ৪৭ শতাংশই আমেরিকা অঞ্চলের। ইউরোপে করোনায় মৃত এবং আক্রান্ত স্থিতিশীল হলেও বর্তমানে সেই হার বাড়তে শুরু করেছেন বলে জানান তিনি।

বর্তমানে মহামারি পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে এবং একেক অঞ্চলে তা একেক রকম। ভাইরাসটির নতুন কিছু ধরন এই সংক্রমণ আরও জটিল করে তুলেছে।

ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের নির্বাহী পরিচালক মাইক রায়ান

একই বৈঠকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউিএিইচও) প্রধান নির্বাহী তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস অন্যদের কথা বিবেচনা না করে সবার আগে করোনা টিকা পাওয়ার জন্য বিশ্বের ধনী দেশগুলোর অতিমাত্রায় ব্যস্ত হয়ে ওঠাকে ‘নৈতিক বিপর্যয়ের চরমসীমা’ বলে ভর্ৎসনা করেছেন। 

উন্নত দেশগুলোর এই লোভের কারণে দরিদ্র দেশগুলো ভুক্তভোগী হচ্ছে উল্লেখ করে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোর ‘আমি প্রথম’ মনোভাবের কারণে টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের টিকা সম্পর্কিত তথ্য ডব্লিউএইচওতে জমা দেয়ার পরিবর্তে উন্নত দেশগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বরাবর জমা দিচ্ছে। ফলে বৈশ্বিকভাবে ব্যবহারের জন্য টিকার অনুমোদন দিতে পিছিয়ে পড়ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।’

গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তৈরি করা ৩ কোটি ৯০ লাখ টিকার ডোজ ব্যবহার করেছে বিশ্বের অন্তত ৪৯টি উচ্চ আয়ের দেশ; আর অনুন্নত প্রতিটি দেশের জন্য তারা বরাদ্দ রেখেছে মাত্র ২৫ ডোজ করে টিকা। ২৫ মিলিয়ন নয়, ২৫ হাজারও নয়; মাত্র ২৫টি টিকার ডোজ।’

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত হুনান সি-ফুড মার্কেটে প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম যে ব্যক্তি মারা যান, ওই মার্কেটে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল।

৬১ বছর বয়স্ক ওই ব্যক্তি যখন মারা যান, তখনো এই রোগের নাম নির্দিষ্ট করা হয়নি। চীনের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘অপরিচিত ধরনের নিউমোনিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনি। এরপর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বর্তমান পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ কোটি ৫০ লাখ ৯১ হাজার ৫৬৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২০ লাখ ৩১ হাজার ৯৪৮ জন এ রোগে মারা গেছেন ।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস