যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সেনাপ্রধান মার্ক মিলি

রাজনৈতিক পালাবদলের ফলে আফগানিস্তানের পাঞ্জশিরে যে সংঘাত শুরু হয়েছে, তা অদূর ভবিষ্যতে দেশটিকে গৃহযুদ্ধের পথে ঠেলে দিতে পারে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল মার্ক মিলি। খবর রয়টার্সের।

শনিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) জার্মানির রামস্টেইন বিমান ঘাঁটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মার্ক মিলি।

সাক্ষাৎকারে পাঞ্জশির প্রদেশে তালেবান বাহিনী ও ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের (এনআরএফ) মধ্যকার সংঘাতকে ইঙ্গিত করে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ যুগ্ন সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার সামরিক অভিজ্ঞতা বলছে- আফগানিস্তান সম্প্রতি যে পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে তা গৃহযুদ্ধে রূপ নিতে পারে; এবং আফগানিস্তানের সব শক্তিকে একত্রিত করে তালেবান বাহিনী আদৌ কখনও একটি সরকার গঠন করতে পারবে কি না- তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।’

যদি আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয় সেক্ষেত্রে আগামী বছর তিনেকের মধ্যে দেশটি আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে উল্লেখ করে মার্ক মিলি এ সম্পর্কে আরও বলেন, ‘যদি আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, আল কায়দা নেটওয়ার্ক আবার নিজেদের সংগঠিত করা শুরু করবে, আইএসও চুপচাপ বসে থাকবে না।’

‘আর এই দুই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের প্রভাবে আফগানিস্তানসহ বিশ্বজুড়ে অসংখ্য সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর উত্থান ঘটা খুবই স্বাভাবিক।’

আফগানিস্তানের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাঞ্জশিরে গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তীব্র সংঘাত চলছে তালেবান বাহিনী ও এনআরএফ যোদ্ধাদের মধ্যে। তালেবানবিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহের জোট নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের সাবেক নেতা আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমাদ মাসুদ ও আফগানিস্তানের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহর অনুগত বাহিনী ও আফগান সেনাবাহিনীর তালেবানবিরোধী সদস্যদের নিয়ে গঠিত এনআরএফের যোদ্ধার সংখ্যা কয়েক হাজার।

যুদ্ধে কোন পক্ষ সুবিধাজনক অবস্থানে আছে, তা এখনও স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে না; কারণ, তালেবান ও এনআরএফ- উভয়ই দাবি করছে এই যুদ্ধে তারা অপরপক্ষের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে।

রোববার এক টুইটবার্তায় তালেবান মুখপাত্র বিলাল কারিমি বলেছেন,  ‘মুজাহিদিনরা (তালেবান বাহিনী) পাঞ্জশিরের কেন্দ্রীয় রাজধানীর দিকে অগ্রসর হচ্ছে।’

অন্যদিকে এনআরএফ মুখপাত্র ও আহমাদ মাসুদের অনুগত বাহিনীর জ্যেষ্ঠ সদস্য ফাহিম দাশতি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, পাঞ্জশিরের খাওয়াক পাস উপত্যকায় তালেবান বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য আটকা পড়েছে এবং প্রদেশের দাশতে রেওয়াক এলাকার তালেবান যোদ্ধারা তাদের অস্ত্রশস্ত্র ও যানবাহন ফেলে রেখে পালিয়েছে।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ