জালে ধরা পড়ল সমুদ্রের ‘সোনা মাছ’, রাতারাতি কোটিপতি জেলে
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ মহারাষ্ট্রের পালঘরের কয়েকজন মৎস্যজীবী সম্প্রতি সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। তাদের জালে ধরা পড়ে বেশ কিছু ঘোল মাছ। এতেই রাতারাতি ভাগ্য বদলে যায় তাদের। কোটি টাকার নিলাম হয় সেই মাছের।
অন্যান্য মাছের মতোই দেখতে, মুখের দিকে সোনালি আভার এই মাছ কেন এত দামি? দামের জন্যই ‘সমুদ্রের সোনা’ বলা হয় এই মাছকে। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘প্রোটোনিবিয়া ডায়াকানথুস।’
বিজ্ঞাপন
ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া— এসব দেশে এই মাছের চাহিদা আকাশচুম্বী। এই মাছের ঔষধি গুণ থাকাতেই মূল্য এত বেশি। মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ওষুধ উৎপাদন সংস্থাগুলো এই মাছ কিনে নেয়। তারপর এর দেহের প্রায় প্রতিটি অংশ দিয়েই তৈরি হয় ওষুধ।
আরও পড়ুন : ইউটিউবে ভিডিও দেখে সন্তানের জন্ম দিল কিশোরী!
প্রোটোনিবিয়া ডায়াকানথুস মাছের বায়ু পটকা দিয়ে বৃক্কের নানা রোগ নিরাময়ের ওষুধ তৈরি হয়। বিশেষ করে বৃক্কে পাথর জমলে, তা দূর করতে নাকি দারুণ উপকারী ঘোল মাছের পটকা থেকে তৈরি ওষুধ।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ওই মাছের হৃদয়। যে কারণে এ হৃদয়কে ‘সোনার হৃদয়’ও বলা হয়। মাছের পাখনাও ফেলে দেওয়া যায় না। পাখনা দিয়ে নানা ওষুধ তৈরি হয়। দামি মদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
এ ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ, ভিটামিন রয়েছে এই সামুদ্রিক মাছে। অস্ত্রপচারের পর দেহের সঙ্গে মিশে যাওয়া সেলাইয়ের সুতো তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় এই মাছের শরীরের অংশ।
আরও পড়ুন : কনসার্টে ভক্তের মুখে মূত্রত্যাগ করলেন সংগীতশিল্পী সোফিয়া
এই মাছের দাম নির্ভর করে এর ওজন এবং মাছটি পুরুষ না স্ত্রী, তার ওপর। একটি ৩০ কেজির পুরুষ ঘোলের দাম অন্তত চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে। অন্যদিকে, ওই ওজনের একটি স্ত্রী ঘোলের দাম অনেকটাই কম হয়। এক থেকে দু’লাখ টাকা।
দেহের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আকার এবং কতটা পুরু তার উপরও নির্ভর করে দাম। এর আগে, সাড়ে ১৯ কেজির একটি ঘোল মাছ ধরা পড়েছিল ওড়িশায়। এক ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা সেটি আট হাজার টাকা কেজিতে কিনেছিল।
তারপর ২০১৯ সালে ১০ কেজি ওজনের মাছ ধরা পড়েছিল জালে। বিক্রি হয়েছিল কেজি প্রতি ১০ হাজার টাকায়। ১৯ কেজির ওই মাছটিই এখনও পর্যন্ত ভারতে ধরা পড়া সবচেয়ে বড় ঘোল মাছ।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের পালঘরের ওই মৎস্যজীবীরা ১৫৭টি ঘোল মাছ পেয়েছেন। যা বিক্রি হয়েছে ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকায়। আনন্দবাজার।
এসএস