সংস্পর্শ ছাড়াই খাবার ও ওষুধ পৌঁছে দিতে অভিনব উদ্যোগ
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত ইন্দোনেশিয়া। মহামারির প্রভাব বেশ ভালোভাবেই পড়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে। সংক্রমণ ও মৃত্যুতে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে থাকা এই দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে থাকা রোগীদের কাছে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও খাবার যাচ্ছে ড্রোনের মাধ্যমে।
রোগীদের কাছে কন্টাক্টলেস ভাবে (কোনো ধরনের সংস্পর্শ ছাড়াই) প্রয়োজনীয় ওষুধ ও খাবার পৌঁছে দিতেই দেশটির দক্ষিণ সুলাওয়েসি দ্বীপে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, পাঁচটি ড্রোনের মাধ্যমে মোট সাত জনের একটি দল ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ সুলাওয়েসি প্রদেশের রাজধানী মাকাসারের করোনা রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। এই পাঁচটি ড্রোনের মাধ্যমে জরুরি ওষুধ ও খাবার পৌঁছাতে ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন তারা। গত জুলাই মাসের শুরু থেকে অভিনব পন্থায় এই সেবা দেওয়া শুরু করেন সাত জনের ওই দল।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে সেলফ আইসোলেশনে রয়েছেন হারতাতি নামে এক নারী। ড্রোনের মাধ্যমে কোনো ধরনের সংস্পর্শ ছাড়াই আইসোলেশনে থাকা মানুষের কাছে ওষুধ ও জরুরি খাবার সরবরাহের এই অভিনব পন্থাকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন।
৫০ বছর বয়সী এই গৃহণী রয়টার্সকে বলেন, ড্রোনের মাধ্যমে ওষুধ হাতে পাওয়াটাকে আমি অনেক বেশি নিরাপদ মনে করি। এছাড়া জরুরি পণ্য হাতে নেওয়ার সময় কারও সংস্পর্শ এড়ানোটা এখন খুবই জরুরি।
রয়টার্স বলছে, এশিয়ায় করোনাভাইরাস মহামারিতে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত দেশগুলোর একটি ইন্দোনেশিয়া। মাকাসারের করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের তথ্য অনুযায়ী, গৃহবধূ হারতাতির পরিবার যে এলকায় বসবাস করেন, সেখানকার প্রায় ৮০ শতাংশ বাসিন্দা বর্তমানে এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত।
আর তাই কোনো ধরনের সংস্পর্শ ছাড়াই ‘মাকাসার রিকভার ড্রোন মেডিক’ সংগঠনের মাধ্যমে করোনায় আক্রান্তদের এবং আইসোলেশনে থাকা রোগীদের কাছে ওষুধ ও খাবার পৌঁছাতে অভিনব এই পন্থা বেছে নেন এর প্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক মোহাম্মদ দাসিসিয়ারা দাহইয়ার। প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচবার এই সেবা দেন তিনি।
গত জুলাইতে ইন্দোনেশিয়ায় সংক্রমণ যখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল, সেই সময়ে প্রতিষ্ঠানটি রোগীদের কাছে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৫ বার খাবার ও ওষুধ পৌঁছে দিয়েছেন। আর অভিনব এই বিষয়টিকে বেশ ইতিবাচকভাবেই দেখছে স্থানীয় প্রশাসন। পন্থাটি পছন্দ হওয়ায় তারা এখন এটিকে আরও এগিয়ে নিতে চান।
মাকাসারের মেয়র মোহাম্মদ রামদান পোমাতো জানিয়েছেন, পার্শ্ববর্তী দ্বীপগুলোতে আইসোলেশনে থাকা মানুষের কাছে খাবার ও ওষুধ পৌঁছে দিতে কর্তৃপক্ষ ড্রোনের ব্যবহার আরও বাড়াবে।
টিএম