ডলারের বিপরীতে নিজস্ব মুদ্রা শ্রীলঙ্কান রুপির দাম পড়ে যাওয়ায় বাড়তে থাকা খাদ্যদ্রব্যের মূল্যে লাগাম টানতে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা। এ বিষয়ে গঠিত সরকারি কমিশন মঙ্গলবার থেকে কাজও শুরু করে দিয়েছে।

চলতি বছর ডলারের বিপরীতে শ্রীলঙ্কান রুপির মূল্য কমেছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আগস্টের আগ পর্যন্ত এই হার ছিল ৬ শতাংশ।

ব্যাপক এই মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবে চলতি বছর থেকেই বাড়ছে চাল-আটা-চিনি-তেল-গুঁড়াদুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব খাদ্যদ্রব্যের দাম। আগস্ট মাস থেকে তা প্রায় লাগামহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে।এছাড়া, কেরোসিন এবং রান্নার কাজে ব্যবহার্য গ্যাসের দামও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।

রোববার শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেলকে প্রধান করে জরুরি সেবা কমিশন গঠন করেছে দেশটির সরকার। এক বিবৃতিতে এ সম্পর্কে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকশে বলেছেন, ‘কমিশনের মাধ্যমে জনগণকে ন্যায্যমূল্যে খাদ্যদ্রব্য ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করা হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারক করবেন।’

‘কোনো অসাধু ব্যবসায়ী বা ব্যবসায়ীগোষ্ঠী যদি খাদ্যদ্রব্য মজুতের মতো অপরাধমূলক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হন, সেক্ষেত্রে গোডাউনে অভিযান চালানো ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী/ব্যবসায়ীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও কমিশনের কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে।’

দেশটির জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খ্যাদ্যদ্রব্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে শ্রীলঙ্কার রুপির মান পড়ে যাওয়ার সরাসরি যুক্ততা আছে। তাছাড়া মহামরির কারণে অর্থনীতি সংকুচিত হওয়াও দ্রবমূল্যে সাম্প্রতিক এই উল্লফনের অন্যতম কারণ।

কর্মকর্তারা জানান, শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম বড় ও গুরুত্বপূর্ণ খাত হলো পর্যটন। করোনা মহামারির কারণে এই খাতটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং এর ফলে দেশটির অর্থনীতি গত বছর সংকুচিত হয়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রা মজুত রক্ষার্থে গত বছর থেকে মোটরগাড়ি ও বিলাসজাত পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল শ্রীলঙ্কার সরকার।

করোনাভাইরাসের পরিবর্তিত ধরন ডেল্টায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে ১৬ দিনের কারফিউয়ে আছে দেশটি।

সূত্র : বিবিসি

এসএমডব্লিউ