ইতালির উপকূল থেকে বাংলাদেশিসহ পাঁচ শতাধিক অভিবাসী উদ্ধার
অবৈধপথে ইউরোপে যাওয়ার সময় ৫৩৯ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে ইতালি। শনিবার (২৮ আগস্ট) দেশটির ল্যামপেদুসা দ্বীপের কাছে একটি মাছ ধরার নৌকা থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে দেশটির কোস্টগার্ড। উদ্ধারকৃত অভিবাসীদের মধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশিও রয়েছেন। ইতালীয় উপকূল থেকে এক দিনে এটিই সর্বোচ্চসংখ্যক অভিবাসী উদ্ধারের ঘটনা।
রোববার (২৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, জরাজীর্ণ মাছ ধরার নৌকা থেকে উদ্ধারকৃত বিশাল সংখ্যক এই অভিবাসীদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। অভিবাসীদের মধ্যে অনেকেই উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পার হয়ে ইতালির উপকূলে পৌঁছেছিলেন।
বিজ্ঞাপন
তাদের মধ্যে অনেকেই আবার সহিংসতার চিহ্ন বহন করছেন বলেও জানিয়েছে বিবিসি। এদিকে প্রকৃত ঘটনা জানতে তদন্তকাজ শুরু করেছেন ইতালির কর্মকর্তারা।
মানবাধিকার গ্রুপ এমএসএফ (ডক্টরস উইদআউট বর্ডারস)-এর চিকিৎসক আলিদা সেরাচিয়েরি জানিয়েছেন, উদ্ধারকৃতদের মধ্যে কিছুসংখ্যক অভিবাসী লিবিয়ায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। ইউরোপে প্রবেশের লক্ষ্যে নৌকার জন্য অপেক্ষার সময় তারা নির্যাতনের শিকার হন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইতালির সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, অভিবাসীরা লিবিয়াতে হয়তো মিথ্যা কারাবাসের শিকার হয়েছিলেন এবং কর্মকর্তারা এই বিষয়টিই খতিয়ে দেখছেন।
আলিদা সেরাচিয়েরি বলছেন, ইতালির কোস্টগার্ডের হাতে উদ্ধারের আগপর্যন্ত অভিবাসীদের ওই নৌকাটি ঠিক কতটা সময় সমুদ্রে ছিল বা কবে নাগাদ সেটি লিবিয়ার উপকূল থেকে ইতালির উদ্দেশে ছেড়ে আসে, তা এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
তবে তিনি বলছেন, ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করার আগে এসব অভিবাসী লিবিয়ার পাচারকারীদের অধীনে সপ্তাহের পর সপ্তাহ, এমনকি কয়েকমাস পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলেন।
ডক্টরস উইদআউট বর্ডারস’র চিকিৎসক সেরাচিয়েরি আরও বলেন, উদ্ধারকৃত অভিবাসীদের বেশিরভাগই উত্তর আফ্রিকার অথবা পশ্চিম আফ্রিকার বাসিন্দা। তবে তাদের মধ্যে কয়েকজন রয়েছেন যারা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, উদ্ধারের পর ইতালির কোস্টগার্ডের দু’টি নৌকা, ইতালির আর্থিক অপরাধ বিষয়ক পুলিশের একটি নৌকার মাধ্যমে অভিবাসীদেরকে ল্যামপেদুসা দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়। এই উদ্ধার অভিযানকে সাম্প্রতিকালের অন্যতম বড় অভিযান বলে বর্ণনা করেছেন দ্বীপটির মেয়র টোটো মারতেল্লো।
ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধপথে ইউরোপে পৌঁছাতে অভিবাসীরা সবচেয়ে বেশি যে স্থানটি ব্যবহার করে থাকে সেটি হচ্ছে ল্যামপেদুসা। গত মে মাসে কয়েক ঘণ্টার ব্যাবধানে এক হাজারেরও বেশি অভিবাসী এই দ্বীপে ঢুকে পড়েছিলেন।
টিএম