করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ৭ হাজার ২০০ কোটি রুপি ছাড় দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দেশজুড়ে অক্সিজেন সরবরাহ ও রাজ্যসমূহকে এই দুর্যোগ মোকাবিলার প্রাথমিক প্রস্তুতির কাজ শুরু করতে এই অর্থ ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

গত ৮ জুলাই করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য মোট ২৩ হাজার ১২৩ কোটি রুপি বরাদ্দ পেয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেখান থেকেই শুক্রবার এই অর্থ ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

ছাড় করা এই অর্থের আওতায় দেশজুড়ে ১ হাজার ৭৫৫টি অক্সিজেন প্ল্যান্টকে আর্থিক সহায়তা (কমিশন) দেওয়া হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বর্তমানে ভারতে সরকারি অর্থ সহায়তা পাচ্ছে ৩৭৫ টি প্ল্যান্ট।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালে অক্সিজেনের চরম সংকটের মুখে পড়েছিল ভারতের বিভিন্ন রাজ্য। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আসন্ন তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় জেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন মজুত রাখার ব্যাপারটিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ছাড়কৃত ৭ হাজার ২০০ কোটি রুপিতে ভারতের প্রতি জেলায় অন্তত একটি লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক বসানো হবে এবং এই গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে হাসপাতালগুলো যেন সেই ট্যাঙ্ক থেকে অক্সিজেনের সরবরাহ পায়, তা নিশ্চিত করা হবে।

প্রাথমিকভাবে দেশজুড়ে ৯৬১ টি ট্যাংক স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ট্যাংকে অন্তত ১০ হাজার কিলোলিটার অক্সিজেন সংরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রদেশের জেলাশহরসমূহের হাসপাতালগুলোর অবকাঠামোকগত উন্নয়ন, ওষুধ ও মেডিকেল অক্সিজেনের মজুত বাড়াতেও অর্থ ব্যায় করা হবে।

ভারতের জাতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়াকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজ্যসমূহকে করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহকে জুলাই মাসেই ১ হাজার ৮২৭ কোটি রুপি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।

শুক্রবার এই বরাদ্দের পরিমাণ বাড়িয়ে ১৪ হাজার ৭৪৪ কোটি রুপিতে উন্নীত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ছাড় হওয়া ৭ হাজার ২০০ রুপি থেকে বরাদ্দকৃত অর্থের কিছু অংশ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

গত মার্চ মাস থেকে শুরু হওয়া করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় এলোমেলো ভারত দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি দ্বিতীয় ঢেউ।

এর মধ্যেই গত জুনে দেশটির জনস্বাস্থ্য ও জীবাণু বিশেষজ্ঞরা সতর্কবার্তা দিয়েছেন- চলতি বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বর থেকে তৃতীয় ঢেউ শুরু হতে পারে ভারতে।

অবশ্য আসন্ন দুর্যোগ দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো ছারখার পরিস্থিতি তৈরি করবে না বলে প্রাথমিক আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

এসএমডব্লিউ