টিকা নিয়েও ভারতে করোনায় আক্রান্ত প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার
ভারতে করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার পরও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। টিকা নেওয়ার পর করোনায় আক্রান্তের এই সংখ্যা দেশটিতে দেওয়া মোট ৫৩ কোটি ১৪ লাখ ডোজ করোনা ভ্যাকসিনের মাত্র ০ দশমিক ০৪৮ শতাংশ বলে শুক্রবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় বলেছে, করোনায় ওই আক্রান্তদের মধ্যে অন্তত এক ডোজ নেওয়া মানুষের সংখ্যা এক লাখ ৭১ হাজার ৫১১ জন। এছাড়া টিকার উভয় ডোজ নেওয়ার পর করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৭ হাজার ৪৯ জন। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পর সংক্রমণের হার ৫০ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ভারতে অনুমোদন পাওয়া কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন এবং স্পুটনিক-৫ নেওয়ার পর লোকজন এই তিন টিকা থেকেই প্রায় একই মাত্রার সুরক্ষা পেয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
টিকা নেওয়ার পর লোকজনের করোনায় আক্রান্তের হার খুবই কম হলেও দেশটির মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞরা এবং সরকার উদ্বেগে রয়েছে। বিশেষ করে করোনার নতুন ধরনের বিরুদ্ধে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দেশজুড়ে টিকা নেওয়ার পর লোকজনের করোনা সংক্রমিত হওয়ার বিষয়টি শনাক্ত করার কাজ শুরু হবে বলে জানান। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আক্রান্তদের তথ্য সংগ্রহের কাজ আগামী সপ্তাহে শুরু হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
টিকা নিয়েও যারা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের নমুনা সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের উত্থান ঘটছে কি-না তা জানতে এসব নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করার কথা জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় টিকা নেওয়া ৪০ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা দেশটির সরকারের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এই আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা একবার সংক্রমিত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং টিকা নেওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো করোনা সংক্রমিত হয়েছেন।
কেরালায় হঠাৎ করে সংক্রমণ লাগামহীন হতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই রাজ্যে নতুন করে আরও ১৮ হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
কেরালায় টিকা নেওয়ার পর যে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই রাজ্যের পাঠানামথিট্টা জেলার। এই জেলায় টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৯৭৪ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৪২ জন।
গত মাসে ভারতের মেডিক্যাল গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) প্রি-প্রিন্ট এক গবেষণায় বলা হয়, করোনায় আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা এবং মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমিয়ে ফেলতে সক্ষম ভ্যাকসিন। প্রথম সংক্রমণ থেকে মানুষকে রক্ষায় টিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়া যারা ইতোমধ্যে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের জন্যও টিকা গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র: এনডিটিভি।
এসএস