ভ্যাকসিন সার্টিফিকেটে মোদির ছবির পেছনে যুক্তি কী
করোনার ভাইরাসের টিকা যারা নিচ্ছেন সব দেশেই তাদের ‘ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট’ দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, বিদেশযাত্রাসহ বহু কাজে ব্যবহৃত হবে এই সার্টিফিকেট।
একই রীতি অনুসরণ করে ভারতে যে ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে তাতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি রয়েছে। আর এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিজ্ঞাপন
ভারতের বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সাধারণ মানুষদেরও কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন। সার্টিফিকেটে কেন প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকতে হবে? অনেকে আবার মনে করছেন ভোট আদায়ের জন্য জনগণের মনে জায়গা পাওয়ার একটা চেষ্টা থেকে সার্টিফিকেটে এভাবে মোদির ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার ভারতের সংসদ অধিবেশনেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছে, বৃহত্তর জনস্বার্থেই ভ্যাকসিন সার্টিফিকেটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বার্তাসহ ছবিটি দেওয়া জরুরি এবং যুক্তিসঙ্গত।
মঙ্গলবার সংসদে প্রশ্নটি তুলেছিলেন কংগ্রেসের কুমার কেতকার। তিনি প্রশ্ন করেন, কোভিড-১৯ টিকার সার্টিফিকেটে প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রিন্ট করা কি বাধ্যতামূলক? তার প্রয়োজনীয়তা ঠিক কী? এই সিদ্ধান্তের পেছনে কী কী কারণ রয়েছে এবং কে এই ছবি ও বার্তা দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে সেই প্রশ্নও করেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ।
জবাবে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ভারতী প্রবীণ পওয়ার বলেন, কোভিড মহামারি এবং তার ক্রমাগত বদলে যাওয়া প্রকৃতির প্রেক্ষিতে কোভিড-উপযুক্ত আচরণগুলোই রোগের বিস্তার রোধের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। টিকা নেওয়ার পরে যাতে ভারতীয়রা কোভিড-১৯ মহামারির সময়ের উপযুক্ত আচরণ অনুসরণ করেন, সেই বার্তাই দেওয়া হয়েছে টিকার সার্টিফিকেটে। এই ধরনের বার্তাগুলো জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়াটা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। আর প্রধানমন্ত্রীর ছবি ও বার্তাই সেক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। তাই সচেতনভাবেই তার ছবি ও বার্তা বস্তুত করোনা সচেতনতার বার্তাটিকেই আরও শক্তিশালী করেছে।
মন্ত্রী আরও জানান, কো-উইনের মাধ্যমে ভারত সরকারের দেওয়া করোনা টিকাদান সার্টিফিকেটের বিন্যাস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই করা হয়েছে। তিনি জানান, হু নির্দেশ দিয়েছে, টিকা নেওয়ার পরেও কোভিড মহামারিকালীন উপযুক্ত আচরণবিধি অনুসরণ করার গুরুত্ব সম্পর্কে, টিকা সার্টিফিকেটেই প্রয়োজনীয় বার্তা দিতে হবে। সেই বিষয় বিবেচনা করেই প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ সার্টিফিকেট ছাপার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অনেক প্রশ্নের উত্তর দিলেও কুমার কেতকরের একটি প্রশ্নের জবাব দেননি ভারতী প্রবীণ পওয়ার। কেতকর জানতে চেয়েছিলেন, এর আগে কোনো সরকার পোলিও, গুটিবসন্ত ইত্যাদি রোগের ভ্যাকসিন সার্টিফিকেটে কি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রিন্ট করা আবশ্যিক বা বাধ্যতামূলক করেছিল? এর জবাব অবশ্য দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার।
এনএফ