আফগানিস্তানের আরেকটি প্রাদেশিক রাজধানীর পতন হয়েছে বিদ্রোহীগোষ্ঠী তালেবানের হাতে। মঙ্গলবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ফারাহর রাজধানী ফারাহ দখলে নিয়েছে তালেবান। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে তালেবান দেশটির সাতটি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

এএফপি বলছে, তালেবানের যোদ্ধারা ফারাহ দখলে নেওয়ায় ওই শহরের লাখ লাখ বাসিন্দা রাজধানী কাবুলের উত্তরে এবং অন্যান্য এলাকায় তুলনামূলক নিরাপদ স্থানে পালিয়ে গেছেন।

ওই প্রদেশের একজন আইনপ্রণেতা বলেছেন, পশ্চিম আফগানের ফারাহ প্রদেশের রাজধানী ফারাহর দখল নিয়েছে তালেবান বিদ্রোহীরা। এদিকে, তালেবানের একজন মুখপাত্র টুইটারে একটি ছবি টুইট করেছেন। এতে দেখা যায়, ফারাহ শহরে পুলিশের প্রধান কার্যালয় এবং অন্যান্য সরকারি অফিসের প্রবেশদ্বার হেঁটে পার হয়ে যাচ্ছেন। 

ফারাহ প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য শাহলা আবুবার বলেন, স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা শহরের বাইরের একটি সেনা ঘাঁটির দিকে পিছু হটেছেন।

এর আগে, সোমবার পর্যন্ত দেশটির উত্তর, দক্ষিণ এবং পশ্চিমাঞ্চলের ছয়টি প্রদেশের রাজধানীর দখল বিদ্রোহী এই গোষ্ঠীর হাতে চলে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন তালেবান এবং আফগান সরকারি কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার ফারাহ দখলে নেওয়ায় সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল সাতটিতে।

মার্কিন-নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা দেশটি ছাড়তে শুরু করায় শাসনক্ষমতা দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে তালেবান। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি আঞ্চলিক শক্তিশালী গোষ্ঠীগুলোকে সরকারের প্রতি সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে, জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আফগানিস্তানে গত ২০ বছরে মানবাধিকার পরিস্থিতির যে উন্নতি হয়েছে তা মুছে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

দেশটির জাতীয় দুর্যোগ কর্তৃপক্ষের প্রধান গুলাম বাহাউদ্দিন জাইলানি রয়টার্সকে বলেছেন, আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে অন্তত ২৫টিতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের লড়াই চলছে। গত দুই মাসে ৬ লাখের বেশি পরিবার বাস্ত্যুচুত হয়েছে; যাদের অধিকাংশই রাজধানী কাবুলে আশ্রয় নিয়েছে। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আফগানিস্তানের মোট ভূখণ্ডের ৬৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তালেবান। এছাড়া ১১টি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে সরকারি বাহিনীর কাছে সহায়তা পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে তালেবানের যোদ্ধারা।

এসএস