আরও দুই প্রাদেশিক রাজধানী তালেবানের দখলে
নিমরোজ প্রদেশের রাজধানী জারাঞ্জ, জাওজান প্রদেশের রাজধানী শেবেরঘানের পর এবার আফগানিস্তানের আরও দু’টি প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিয়েছে তালেবান। রোববার এক প্রতিবেদেনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি তালেবানের দখলে যাওয়া দুই প্রাদেশিক রাজধানীর নাম কুন্দুজ এবং সার-ই-পুল। এই প্রাদেশিক রাজধানীগুলোর নাম রাখা হয়েছে প্রদেশের নাম অনুসারে। অর্থাৎ কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানীর নাম কুন্দুজ এবং সার-ই-পুল প্রদেশের রাজধানীর নাম সার-ই-পুল। দু’টিই আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ।
বিজ্ঞাপন
কুন্দুজ প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য আমরুদ্দিন ওয়ালি বলেন, ‘রাজধানীর সড়কগুলোতে তালেবান ও আফগান সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। সামরিক বাহিনীর কিছু সদস্য আক্রমণের মুখে বিমানবন্দরের দিকে পিছু হটেছেন।’
এদিকে সার-ই-পুলেও একই অবস্থা বলে জানিয়েছেন ওই প্রদেশের একজন আইনপ্রণেতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘রাজধানীর প্রতিটি সড়কে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তালেবানদের যুদ্ধ হচ্ছে। ইতোমধ্যে শহরের মূলকেন্দ্রে ঢুকে পড়েছে তালেবান।
এই নিয়ে আফগানিস্তানে তালেবান দখলকৃত প্রাদেশিক রাজধানীর সংখ্যা পৌঁছাল চারে। এর আগে শুক্রবার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ নিমরোজের রাজধানী জারাঞ্জ এবং শনিবার উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ জাওজানের রাজধানী শেবেরঘানের দখল নেয় তালেবানগোষ্ঠী।
২০০১ সালে ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে বিমান হামলা করেছিল মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদা নেটওয়ার্ক। সে সময় এই গোষ্ঠীর প্রধান ঘাঁটি ছিল তালেবান শাসিত আফগানিস্তান।
টুইন টাওয়ারে হামলার জেরে ওই বছর আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে মার্কিন ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। অভিযানে পতন হয় তালেবান সরকারের।
অভিযানের প্রায় ২০ বছর পর গত এপ্রিলে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ঘোষণায় তিনি বলেছিলেন, ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব মার্কিন ও ন্যাটো সেনাসদস্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। পরে এই সময়সীমা আরও এগিয়ে ৩১ আগস্ট করা হয়।
বাইডেনের ঘোষণার পর থেকেই নতুন উদ্যমে আফগানিস্তান পুনরায় দখলে নিয়ে আসার অভিযান শুরু করেছে তালেবান। মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদর দফতর পেন্টাগনের তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তানের ৪১৯টি জেলার অর্ধেকেরও বেশির দখল নিয়েছে কট্টরপন্থি এই ইসলামিগোষ্ঠী। তালেবান দখলকৃত এলাকাসমূহের মধ্যে ইরান ও পাকিস্তানের সীমান্ত সংলগ্ন জেলাও আছে।
এদিকে, আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার ও তালেবানগোষ্ঠীর মধ্যে সমঝোতা স্থাপনের যে প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিকভাবে শুরু হয়েছিল; দলটির সাম্প্রতিক অভিযান, সংঘাত ও রক্তপাতের কারণে তা কার্যত থমকে গেছে।
সূত্র : এএফপি
এসএমডব্লিউ