ইথিওপিয়ার আরও একটি শহর টাইগ্রে বাহিনীর দখলে
দীর্ঘদিন ধরে ইথিওপিয়ার টাইগ্রে শহর নিয়ে টাইগ্রে বাহিনী ও ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে লড়াই চলছে। দেশটির প্রেসিডেন্টের নির্দেশে সেনারা কার্যত পুরো টাইগ্রে শহর অবরোধ করে লড়াই চালাচ্ছিল। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। টাইগ্রে নিজেদের দখলে রাখার পাশাপাশি এবার ঐতিহাসিক লালিবেলা শহরও বুধবার দখল করেছে টাইগ্রের বাহিনী।
সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, এই লালিবেলা শহরেই আছে দ্বাদশ শতকের একটি পাথরের চার্চ। যা জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো) কতৃক স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ বা বিশ্ব ঐতিহ্য। আর তাই লালিবেলা দখলের পরেই টাইগ্রে বাহিনীর গির্জাটির ক্ষতি না করার আহ্বান জানিয়েছে ইউনেস্কো। এছাড়া সহিংসতা বর্জনের আহ্বানও জানিয়েছে জাতিসংঘ।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন, বুধবার লালিবেলা শহর টাইগ্রে বাহিনীর হাতে দখল হয়ে গেলেও কোনো রক্তপাত হয়নি। টাইগ্রে বাহিনী প্রচুর অস্ত্র নিয়ে প্রথমে শহর ঘিরে ফেলে। তারপর ভেতরে ঢোকে। কিন্তু তাদের আটকানোর মতো কেউ ছিল না। স্থানীয় তরুণ এবং যুবকরা একটি বাহিনী তৈরি করেছিল। এতোদিন তারা ইথিওপিয়া সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাজ করতো।
তবে টাইগ্রে বাহিনী আসছে শুনে তারা পালিয়ে যায়। পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স এবং অস্ত্র নিয়ে তারা পালায়। স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, লালিবেলার মানুষ ওই বাহিনীর কাছ থেকে বন্দুক চেয়েছিল। কিন্তু তাও দেওয়া হয়নি তাদের। ফলে টাইগ্রের বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে নামেনি কেউ। ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনীও ওই অঞ্চল ছেড়ে অনেক আগেই পালিয়ে গেছে।
ইথিওপিয়ার সরকারের কাছে টাইগ্রের লড়াই ছিল মূলত সম্মানের লড়াই। এবার লালিবেলা শহরও হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবে খানিকটা ব্যাকফুটে সরকার। নতুন করে সেখানে অভিযানের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র যুদ্ধের জন্য এখন পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। শরণার্থী শিবিরেও হামলা চালানো হয়েছে। তীব্র অনাহার শুরু হয়েছে ইথিওপিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। এর মধ্যে যদি ফের লড়াই শুরু হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা আরও খারাপ হবে।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
টিএম