যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও তুরস্কের পর গ্রিসে ভয়াবহ দাবানল শুরু হয়েছে। দাবানল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা। সোমবার গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিস বলেছেন, তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবদাহ চলছে দেশে।   

সোমবার দেশে দুটি বড় দাবানল চলছে বলে জানিয়েছে গ্রিস। দাবানলে স্পেন ও ইতালিও পুড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এমন বৃহৎ আকারের দাবানল বাড়ছে। অনেক দেশে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া দেখা দিয়েছে।     

ইইউ’র উপগ্রহে তোলা ছবির বরাতে ন্যাশনাল অবজারভেটরি অব এথেন্স জানিয়েছে যে, গত শনিবার এথেন্স থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরের পাত্রাস শহরে শুরু হওয়া এই দাবানল তিন হাজার হেক্টরের বেশি এলাকায় পাইন ও জলপাইয়ের বাগান পুড়ে ছাঁই হয়েছে।

এছাড়া তুরস্কের পাশের রোডস দ্বীপে আরেকটি বৃহৎ আকারের দাবানল সামলাতে দ্রুত অগ্নিনির্বাপণকর্মীর সংখ্যা বাড়িয়েছে কর্তৃপক্ষ। দেশটিতে শুরু হওয়া এই দুটি দাবানলই বৃহৎ আকারের। দাবানলের আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল।  

দেশের এই দুর্যোগ পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিস বলেন, ‘আমরা ১৯৮৭ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ দাবদাহের মুখোমুখি। তিনি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ‘সম্ভাব্য সবকিছুই’ করছে।

বিদ্যুৎ সেবা সরবরাহকারীদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ভয়াবহ এই দাবানল দেশের বিদ্যুৎ সেবা ব্যবস্থায় বিরুপ প্রভাব ফেলবে। এ জন্য দেশের মানুষকে বিকেলে ও রাতে বিদ্যুৎ ব্যবহার যতটা পারা যায় কম করে করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। 

দেশটির জননিরাপত্ত ও সুরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী নিকোস হারডালিস বলেছেন, ২০১৯ সালের ৯৫৩ এর তুলনায় চলতি বছরের জুলাইয়ে গ্রিসে ১ হাজার ৫৮৪টি স্থানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আগুন লেগেছে ১১৬টি নতুন স্থানে।    

স্টার টিভিকে তিনি বলেছেন, ‘আমরা আর জলবায়ু পরিবর্তনের কথা বলছি না বরং জলবায়ু হুমকির কথাই বলছি। দেশটির আবহাওয়া সংস্থা এএনএ সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে, আজ সোমবারও পাত্রাসের কাছে আগুন পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

দাবানল যেসব এলাকায় হচ্ছে সেসব এলাকার পাশে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ পাঁচটি গ্রাম ও সমুদ্রতীরবর্তী একটি শহরের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে। আগুনে পুড়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আট জন।

এএস