সরকারি সাহায্য পৌঁছানোর সময় কিছু ত্রুটি দেখা গেছে। এতে করে যারা উপকারভোগী হওয়ার কথা তারা নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন ভেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার ‘ই-রুপি’ নামে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম চালু করেছেন।

ক্যাশলেস সিস্টেমকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানিয়ে সোমবার ‘ই-রুপি’ ক্যাশলেস পেমেন্ট ব্যবস্থার উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এর সুবিধা ব্যাখ্যায় বলেন, ‘এটি একটি ভবিষ্যত্দর্শী ডিজিটাল অর্থ প্রদানের প্রক্রিয়া, যা ব্যবহারকারীদের অজস্র সুবিধা দেবে।’

ভারতের ন্যাশনাল পেমেন্ট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া তাদের ইউপিআই পরিষেবার সাহায্যে ই-রুপি পেমেন্ট সিস্টেম তৈরি করেছে। তবে এ ব্যাপারে তাদের সাহায্য করেছে ভারতের অর্থনৈতিক পরিষেবা দফতর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা।

ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার বা ডিবিটি হলো একটি আধুনিক প্রযুক্তি। প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য উপকারভোগীকে লিক-প্রুফ পরিষেবা প্রদান করা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, সরকারি সাহায্যে জালিয়াতি কমানোর ক্ষেত্রে এটা একটা বড় সিদ্ধান্ত। 

বিভিন্ন ব্যক্তিভিত্তিক সরকারি প্রকল্প এবং পরিষেবার জন্য যে অর্থ দিতে হয়, তা এখন থেকে কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই দেওয়া যাবে ই-রুপির সাহায্যে। কিউআর কোড এবং এসএমএস–এর মাধ্যমে হবে আর্থিক লেনদেন। এটি এক ধরনের প্রি-পেইড ব্যবস্থা। 

সাধারণ লেনদেন ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প যেমন, মা-শিশু কল্যাণ প্রকল্পের অধীনে ওষুধপত্র পৌঁছে দেওয়া, পুষ্টি সংক্রান্ত সরকারি সাহায্য, যক্ষা দূর করার প্রকল্প, আয়ুষ্মাণ ভারত, প্রধানমন্ত্রী জন যোজনা, সার ভর্তুকিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ই-রুপির ব্যবহার করা যাবে।

কিউআর কোড বা এসএমএস ভিত্তিক ইলেকট্রনিক ভাউচার উপকারভোগীর মোবাইলে পাঠানো হবে। এটি এককালীন পেমেন্ট পদ্ধতি। এর ব্যবহারকারী সেবা প্রদানকারীর কাছে কার্ড, ডিজিটাল পেমেন্ট অ্যাপ বা ইন্টারনেট ব্যাংকিং ছাড়াই ভাউচার ভাঙাতে সক্ষম হবেন।

ই-রুপি ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিষেবার পৃষ্ঠপোষকদের সুবিধাভোগী বা উপভোক্তা এবং পরিষেবা প্রদানকারীদের সাথে সংযুক্ত করবে। এছাড়া এই ব্যবস্থা এটাও নিশ্চিত করবে যে, পরিষেবা প্রদানকারীকে অর্থ প্রদান শুধু লেনদেন সম্পন্ন হওয়ার পরেই করা হবে। 

এছাড়াও বেসরকারি ক্ষেত্রেও এই ডিজিটাল ভাউচার ব্যবহার করে কর্মীদের কল্যাণমূলক কাজ করা যাবে বলে জানানো হয়েছে সরকারি বিবৃতিতে। এ ছাড়া করপোরেট দফতরগুলোর যে বিভিন্নরকম সমাজকল্যাণমূলক কাজ করে, সে ক্ষেত্রেও ই-রুপি ব্যবহার করা যাবে।

মোদ্দা কথা হলো ই-রুপি প্রকৃতপক্ষে এক ধরনের ই ভাউচার। আমরা যেমন গিফট ভাউচার কিনি, কিছুটা সে রকমই। তবে এক্ষেত্রে শুধু ভাউচারটি কিউআর কোড অথবা এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহকের মোবাইলে পৌঁছে দেওয়া হবে। তারা সেটা ভাঙালে অর্থ পাবেন।

এএস