ফাইজারের ৮০ হাজার ডোজ টিকা ফেলে দিচ্ছে ইসরায়েল
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্বের অনেক দেশ। অনেক দেশের হাতে নেই পর্যাপ্ত টিকা। তবে এই সংকটের মধ্যেও করোনা প্রতিরোধে কার্যকর ফাইজারের তৈরি প্রায় ৮০ হাজার ডোজ টিকা ফেলে দেওয়া বা ধ্বংস করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণেই সেসব টিকা ধ্বংসের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে রোববার (১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি।
এর আগে নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে প্রায় মেয়াদোত্তীর্ণ ৭ লাখ করোনা টিকা দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠিয়েছিল ইহুদি এই রাষ্ট্রটি। একটি বিনিময় চুক্তির অধীনে সেসব টিকা দেশটিতে পাঠানো হয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
শনিবার ইসরায়েলি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আরটি জানিয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় ৬০ বছরের বেশি বয়সী সকল মানুষকে কোভিড-১৯ টিকার তৃতীয় ডোজ দেওয়ার কাজ মাত্রই শুরু করেছে ইসরায়েল। আর এর মধ্যেই ফাইজারের হাজার হাজার ডোজ করোনা টিকা ধ্বংসের প্রস্তুতি নিচ্ছে তেল আবিব। জুলাই মাস শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব টিকার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল-১২’ জানিয়েছে, অব্যবহৃত অবস্থায় মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া ৮০ হাজার ডোজ করোনা টিকার মূল্য প্রায় ১৮ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১৫ কোটি ২৮ লাখ টাকারও বেশি। ফাইজারের মেয়াদোত্তীর্ণ এসব টিকা ‘আবর্জনার মধ্যে নিক্ষেপ’ করা হতে পারে বলেও জানিয়েছে টেলিভিশন চ্যানেলটি।
এদিকে ৬০ বছরের বেশি বয়সী সকল মানুষকে কোভিড-১৯ টিকার তৃতীয় ডোজ দেওয়া শুরু করেছে ইসরায়েল। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিলো দেশটি। গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট জানান, কমপক্ষে পাঁচ মাস আগে যারা করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন, তারা রোববার (১ আগস্ট) থেকে তৃতীয় ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা নিতে পারবেন।
বেনেট সেসময় আরও বলেন, গবেষণায় দেখা যাচ্ছে- (টিকা নেওয়ার পরও) সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। আর তাই করোনা টিকার দু’টি ডোজ সম্পন্ন করা ব্যক্তিদের তৃতীয় ডোজ দেওয়ার লক্ষ্য হচ্ছে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ফের বাড়ানো এবং একইসঙ্গে ভাইরাসে নতুন করে সংক্রমণের শঙ্কা ও মারাত্মক অসুস্থতার আশঙ্কা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা।
এর আগে জুলাই মাসের শুরুতে ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ জানিয়েছিল, ফাইজার-বায়োএনটেকের উদ্বৃত্ত প্রায় ১০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দানের জন্য গ্রহীতা খুঁজছে ইসরায়েল।
সেসময় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক হেজি লেভি বলেন, আমরা অন্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা এটি নিয়ে রাত-দিন কাজ করে চলছি। তবে কোন দেশের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।
ইসরায়েলি এই কর্মকর্তা আরও বলেছিলেন, আগামী ৩১ জুলাই ভ্যাকসিন ডোজগুলোর মেয়াদ শেষ হবে। তবে ভ্যাকসিন দানের যে কোনও চুক্তি হলে তাতে ফাইজারের অনুমোদনের দরকার হবে।
টিএম