করোনাভাইরাসে মৃতদের দেহ রাখার স্থান সংকুলান না হওয়ায় থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের একটি হাসপাতাল হিমায়িত কন্টেইনারে মরদেহ রাখতে শুরু করেছে। করোনায় উপচে পড়া এসব মরদেহ ২০০৪ সালে দেশটিতে আঘাত হানা ধ্বংসাত্মক সুনামির সময় ভয়াবহ স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনছে। মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনই হয়নি এশিয়ার এই দেশটি।

শনিবার থাইল্যান্ডে নতুন করে ১৮ হাজার ৯১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছেন রেকর্ড ১৭৮ জন। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মোট আক্রান্ত ও মৃত্যু ছাড়িয়েছে যথাক্রমে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৮৭ এবং ৪ হাজার ৮৫৭ জন।

রাজধানী ব্যাংককের কাছের থাম্মাসাত ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের ১০ জনের একটি ফ্রিজার মর্গ সাধারণত দিনে সাতজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত করে থাকে। কিন্তু করোনাভাইরাসের সাম্প্রতিক ঢেউয়ের কারণে বর্তমানে সেখানে দৈনিক ১০ জনের বেশি মানুষের মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে হচ্ছে।

হাসপাতালের পরিচালক ফারুহাৎ তোর-উদোম রয়টার্সকে বলেছেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্থান নেই। যে কারণে আমরা লাশ রাখার জন্য দু’টি কন্টেইনার কিনেছি। এই দু’টি কন্টেইনারের দাম প্রায় আড়াই লাখ বাথ পড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, অজ্ঞাত কারণে মারা যাওয়া অন্তত ২০ জনের দেহ ওই হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে যাদের নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ এসেছে। এসব মরদেহ মর্গ এবং মেডিকেল কর্মীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করেছে।

ফারুহাৎ বলেন, সুনামির সময় আমরা পরিচয় শনাক্তের জন্য ময়নাতদন্তের অপেক্ষায় থাকা মরদেহ কন্টেইনারে রেখেছিলাম। কিন্তু এর মাঝে আমাদের আর কখনই এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি। সুনামির পর থেকে আমাদের এবারই প্রথম কন্টেইনারে মরদেহ রাখতে হচ্ছে।

শনিবারও একটি কন্টেইনারে বেশ কয়েকটি মরদেহ রাখা হয়। যা তাদের স্বজনদের দ্বারা পরিচয় শনাক্ত করার জন্য রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।

থাম্মাসাত ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের ওই কর্মকর্তা বলেন, যে বিষয়টি আমাদের অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত করে তুলেছে, সেটি হলো আমরা বিনা-চিকিৎসায় মারা যাওয়া লোকজনকে সাহায্য করতে পারিনি।

রাজধানী ব্যাংকক এবং এর আশপাশের প্রদেশের হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ধারণ ক্ষমতা দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রত্যেক দিন শত শত মানুষ হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

এসএস