পেগাসাস-কাণ্ড, কৃষি আইন ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উত্তাল ভারতীয় সংসদের দুই কক্ষ। লোকসভায় বিবৃতির কাগজ ছিঁড়ে স্পিকারের দিকে ছোড়ার অভিযোগে ১০ জন বিরোধী এমপিকে (বেশিরভাগ কংগ্রেসের) সাসপেন্ড করা হয়েছে। হইচই হয়েছে রাজ্যসভাতেও।

উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে দুই কক্ষেই বিজেপিবিরোধী দলগুলোর সদস্যদের কণ্ঠে শোনা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘খেলা হবে’ স্লোগান। এমন বিরোধিতার মধ্যেই উভয় কক্ষে একটি করে বিল পাস করিয়ে নিয়েছে মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার।

‘বাদল অধিবেশনে’র প্রথম দিন থেকেই এমন হই-হট্টগোল চলছে ভারতীয় সংসদে। জোটবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন বিরোধীরা। সরকারও নিজেদের অবস্থানে অনড়। একাধিকবার লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতুবিও হয়েছে।

অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। প্ল্যাকার্ড ছিঁড়ে লোকসভার স্পিকারের আসনের দিকে কাগজ ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনায় কংগ্রেসের গুরজিত সিং আউজলা, টিএম প্রথপন, মানিকাম ঠাকুর, রভনীত সিং বিট্টুর মতো সাংসদদের চিহ্নিত করা হয়েছে। 

গত সপ্তাহে উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণের বিবৃতি ছিঁড়ে দেওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি শান্তনু সেনকে সাসপেন্ড করা হয়। আজ বিরোধীদের আলোচনার দাবিতে আবারও দফায় দফায় অচল হয় সংসদ।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার গত শুক্রবার বলেছেন, ‘তদন্তের কোনো প্রয়োজনই নেই। সরকার সবকিছু স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে। যারা এই বিষয়ে সরকারের দিকে আঙুল তুলছেন, তাদের অন্য কাজ নেই।’ সরকারের সেই অবস্থান অনড়।

রাজ্যসভায় বিরোধীদের চিৎকার-চেঁচামেচির বিরোধিতা করে ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং বলেন, ‘মাস্ক না পরেই এগুলো কী ধরনের আচরণ আপনাদের? অন্তত কোভিড সংক্রান্ত সাধারণ জনস্বাস্থ্য বিধিগুলো তো মেনে চলুন।’

মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বিরোধীদের বলেন, ‘বিরোধী এমপিরা সংসদের কাজে বাধা দিচ্ছেন। তারা প্রতিবাদ করতেই পারেন, কিন্তু তার একটা সীমা রয়েছে। স্পিকার-মন্ত্রীদের দিকে কাগজ ছুড়ে দিচ্ছেন। আলোচনা না-করে বিরোধীরা পালাচ্ছেন কেন?’

রাজ্যসভার অধিবেশন চলাকালীন উত্তেজনায় অজ্ঞান হয়ে যান তৃণমূল সদস্য শান্তা ছেত্রী। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবশ্য বাড়ি ফিরেছেন তিনি। এ সময় নিকটবর্তী মহাদেব রোডে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।

তৃণমূল দলীয় রাজ্যসভার সদস্য সুখেন্দুশেখর রায়ের বাড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় পেগাসাস-কাণ্ড নিয়ে মোদি সরকারকে আবারও তুলাধুনা করলেন তৃণমূল নেত্রী। গতকাল তিনি পেগাসাস কাণ্ডে তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানান। 

রাজ্যসভার অধিবেশনের সম্প্রচার নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল এমপি ডেরেক ও’ব্রায়েন। টুইটারে তিনি লেখেন, সংসদের উচ্চকক্ষে ১৫টি বিরোধী দলের প্রায় ১০০ জন সাংসদের বক্তব্য কাটছাঁট করে সম্প্রচার করা হচ্ছে রাজ্যসভা টিভিতে!’

এএস/জেএস