ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ের মুলান্দের ২৬ বছর বয়সী এক নারী চিকিৎসক গত বছরের জুনের পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত তিনবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে দু’বারই তার করোনা পজিটিভ এসেছে চলতি বছরে টিকা নেওয়ার পর।

টিকা নেওয়ার পর কেউ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন কি না তা জানতে গবেষণার অংশ হিসেবে চিকিৎসক শ্রুশতি হালারির রক্তের নমুনা নেওয়া হয়েছিল। পরে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের সময় তার রক্তে করোনার উপস্থিতি পাওয়া যায়। এই চিকিৎসক বলেছেন, পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি বেশ ভোগান্তির।

দেশটির চিকিৎসকরা বলছেন, ওই চিকিৎসক কেন তিনবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তার কোনও পরিষ্কার জবাব নেই। সার্স-কোভ-২ এর বিভিন্ন ধরনের ভ্যারিয়েন্ট থেকে শুরু করে ইমিউনিটির স্তর নিয়ে ভুল রিপোর্টের কারণেও ওই ফল আসতে পারে। যদিও আরটি-পিসিআর পরীক্ষাকে মানসম্মত হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ সঠিক রিপোর্ট আসে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায়ই চিকিৎসকদের পুনরায় করোনা সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। মুম্বাইয়ের বেশ কয়েকটি হাসপাতালের গবেষণাতেও চিকিৎসকদের একবার সুস্থ হয়ে ওঠার পর পুনরায় করোনা সংক্রমিত হওয়ার প্রমাণ মিলেছে। জিনোম সিকোয়েন্সের সঙ্গে দু’বার সংক্রমিত হওয়ার সময়ের নাক ও গলা থেকে নেওয়া নমুনার তুলনা ছাড়া পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হতে পারে না।

সোমবার মুম্বাইয়ের মুলান্দের বিএমসির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, টিকা নেওয়ার পর হালারি কেন করোনায় ফের সংক্রমিত হলেন তা জানতে সম্প্রতি তার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বিএমসি এবং মুম্বাইয়ের বেসরকারি আরেক হাসপাতালের সঙ্গে এই বিষয়ে গবেষণা করছে ফাউন্ডেশন ফর মেডিকেল রিসার্চ (এফএমআর)। 

চিকিৎসক হালারি গত বছরের ১৭ জুন প্রথমবার করোনা পজিটিভ হন। ওই সময় তিনি মুলান্দের বিএমসি কোভিড কেন্দ্রে কর্তব্যরত ছিলেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৯ মে এবং ১১ জুলাই আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় তার করোনা শনাক্ত হয়। হালারি বলেন, তিনবারই আমার মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল।

গত বছর এক সহকর্মীর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর পরীক্ষায় প্রথমবার হালারিও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। তিনি বলেন, হাসপাতালে আমার চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ায় স্নাতকোত্তরে ভর্তি পরীক্ষার জন্য বিরতিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তারপর থেকে বেশিরভাগ সময়ই বাড়িতে ছিলাম। পরে চলতি মাসে বাবা-মা এবং ২১ বছর বয়সী ভাইসহ পুরো পরিবার করোনায় আক্রান্ত হয়।

হালারির তিনবার করোনা আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে তার চিকিৎসক মেহুল ঠাক্কর বলেন, এটা আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট  অথবা মে মাসে দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হওয়ায় সেই ভাইরাস জুলাইয়ে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠার কারণে হতে পারে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

এসএস