প্রতিবাদ বিক্ষোভের মধ্যেই ফ্রান্সের সংসদ একটি বিলে অনুমোদন দিয়েছে যার ফলে দেশের ভেতরে ভ্রমণেও ‘কোভিড-১৯ পাস’ বাধ্যতামূলক হচ্ছে এবং সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝির মধ্যে দেশের সকল স্বাস্থ্যকর্মীকে অবশ্যই করোনার টিকা নিতে হবে।

ছয় দিন আগে সংসদে বিলটি উত্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, প্লেনে বা ট্রেনে ভ্রমণের জন্য অথবা রেস্তোরাঁ ও অন্যান্য পাবলিক প্লেসে যেতে সবাইকে ‘হেলথ পাস’ দেখাতে হবে। এই পাস পেতে ফরাসি নাগরিকদের হয় দুই ডোজ টিকা নেওয়া থাকতে হবে, নতুবা কয়েকদিনের মধ্যে করোনা টেস্ট করে নেগেটিভ ফলের সনদ থাকতে হবে অথবা করোনা থেকে সেরে ওঠার প্রমাণ থাকতে হবে।

৩০ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে এই বিল। আপাতত এটি কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও শিগগিরই তা ১২ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সী শিশুদের জন্যও প্রযোজ্য হবে। 

স্বাস্থ্যখাতে যারা কাজ করছেন ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তারা যদি টিকা না নেন তবে তাদের চাকরি থেকে সাময়িক স্থগিত রাখা হবে। নভেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত এ বিধি কার্যকর থাকবে। অবশ্য দেশের করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে তারপর এ বিধি আর থাকবে না কি তুলে নেওয়া হবে। 

স্থানীয় সময় সোমবার সকালের দিকে এ বিলে অনুমোদন দেন আইনপ্রণেতারা। 

করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ও টিকা নেওয়ার নিম্নহার নিয়ে কয়েকদিন আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ যে বক্তব্য দিয়েছিলেন এই বিলে মূলত তারই প্রতিচ্ছবি রয়েছে। 

জুনের শেষ দিক থেকে ফ্রান্সে করোনা সংক্রমণ আবার বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ের শুরুর দিকে যেখানে দৈনিক সংক্রমণ কয়েক হাজারে নেমে এসেছিল, সেখানে এখন দিনে ২০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে।
শনিবার ফ্রান্সে ২১ হাজার ৭৬৯ জন করোনা পজিটিভ বলে শনাক্ত হন, যেখানে এক সপ্তাহ আগে ১৬ জুলাই এ সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৫৮৩ জন। 

জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ফ্রান্সের মোট জনগোষ্ঠীর মাত্র ৪৪ শতাংশ টিকার সম্পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন।  

এরপরও এই বিলের প্রতিবাদে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছেন ফ্রান্সে। কেবল শনিবারই ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ এ বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন বিক্ষোভ দেখাতে। পুরো আয়োজনের বেশিরভাগটা শান্তিপূর্ণ হলেও কয়েকটি জায়গায় পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের পর ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়।  

সূত্র : দ্য হিল।  

এনএফ