থুতনিতে বন্দুক ঠেকিয়ে সেলফি তোলার সময় খুলি উড়ে গেল নারীর
শখ থাকা ভাল। কিন্তু সেই শখ যদি জীবন কেড়ে নেয় তাহলে! এমনই এক ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের হারদুই অঞ্চলে। গুলিভর্তি বন্দুক নিয়ে ছবি তুলতে চেয়েছিলেন এক নারী। আর এমন দুঃসাহস দেখানোর জন্য জীবন দিয়ে মূল্য চোকাতে হলো তাকে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, নিহত ওই নারীর নাম রাধিকা গুপ্তা। তিনি উত্তরপ্রদেশের লখনৌয়ের হারদুই অঞ্চলের বাসিন্দা। গুলিভর্তি বন্দুক নিয়ে ছবি তুলতে চেয়েছিলেন তিনি। অসাবধানতাবশত ট্রিগারে চাপ পড়ে যাওয়ায় আর শেষরক্ষা হয়নি। বন্দুক থেকে গুলি ছিটকে গিয়ে ওই নারীর মাথার খুলি উড়িয়ে দেয়। ছবি তোলার সময় আচমকা গুলি চলল কী করে, ভেবে পাচ্ছে না পুলিশও।
বিজ্ঞাপন
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে বন্দুক সঙ্গে নিয়ে এভাবে ছবি তোলার বিষয়টি নতুন কিছু নয়। সেখানে সাধারণত বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেকেই প্রকাশ্যে গুলি চালান। আবার কখনও শখের বশে অনেকেই বন্দুক হাতে ছবিও তোলেন। ভারতের অন্যান্য স্থানে না হলেও বন্দুক জিনিসটা উত্তরপ্রদেশে সাধারণ ব্যাপার।
আর সেই নারীও তাই বন্দুক হাতে নিয়ে ছবি তুলে রাখতে চেয়েছিলেন। তবে বন্দুক হাতে ছবি তুলতে গিয়ে এমন বিপদ ঘটবে কে জানতো! গুলিভর্তি বন্দুক নিয়ে ছবি তুলতে গিয়ে নিহত হন তিনি।
সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ বলছে, নিহত ওই নারী সেলফি তুলতে চেয়েছিলেন। বন্দুকের কার্তুজ তিনি বের করে রাখেননি। গুলিভর্তি বন্দুকটি তিনি এক হাতে তুলে নেন। তারপর বন্দুকের নল রাখেন থুতনিতে। একপর্যায়ে অসাবধানতাবশত গুলি বেরিয়ে সোজা লাগে তার থুতনিতে। আর তাতেই খুলি উড়ে যায় তার।
স্থানীয়রা বলছেন, ২৬ বছর বয়সী রাধিকার সেলফি তোলার শখ ছিল। আর সেই শখ পূরণ করতে গিয়েই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে! শ্বশুরের বন্দুক নিয়ে তিনি এদিন সেলফি তুলতে চেয়েছিলেন। পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে ছিটকে আসা গুলি তার মাথার খুলি এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়। আর এতেই ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান ওই তরুণী।
চলতি বছর মে মাসেই বিয়ে হয়েছিল নিহত রাধিকার। বন্দুকটি ছিল তার শ্বশুরের। ১২-বোর একনলা বন্দুকটি এতদিন থানায় জমা ছিল। কারণ ওই এলাকায় পঞ্চায়েত নির্বাচন ছিল। বৃহস্পতিবার সেই বন্দুক ফেরত পান রাধিকার শ্বশুর। বন্দুকের লাইসেন্স ছিল।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রাধিকার ঘর থেকে গুলির শব্দ শুনে ছুটে যান পরিবারের লোকজন। ঘটনাস্থলেই রাধিকা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তার মৃতদেহের পাশেই পড়ে ছিল মোবাইল। তাৎক্ষণিকভাবে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাধিকার শ্বশুর রাজেশ গুপ্তা পুলিশকে জানিয়েছেন, চলতি বছরের মে মাসে রাধিকার সঙ্গে তার ছেলে আকাশের বিয়ে হয়।
এদিকে বন্দুক ও মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ইতোমধ্যে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সেগুলো পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। রাধিকার ফোন থেকে পাওয়া ছবি মৃত্যুর কয়েক সেকেন্ড আগে তোলা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় রাধিকার স্বামী আকাশকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আকাশ জানান, তার স্ত্রী বন্দুক দেখার পর থেকেই ব্যাপক উৎসাহিত ছিলেন। সেই বন্দুক পাশে রেখে বেশ কয়েকটি ছবিও তুলেছিলেন।
তবে মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন রাধিকার বাবা। এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। তার অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজনই যৌতুকের জন্য রাধিকাকে হত্যা করেছে।
টিএম