জার্মানি-বেলজিয়ামে বন্যায় শতাধিক প্রাণহানি, নিখোঁজ ১৩০০
টানা ভারি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট কয়েক দশকের মধ্যে নজিরবিহীন বন্যায় জার্মানিতে প্রাণহানির সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে। এছাড়া প্রায় ১৩০০ মানুষের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। শুক্রবারের প্রতিবেদনে সবশেষ এই খবর জানিয়েছে বিবিসি।
রেকর্ড বৃষ্টিপাতের পর ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলো প্লাবিত হয়ে ওই অঞ্চলের বিপর্যয় ডেকে এনেছে। জার্মানি ৯৩ জনের প্রাণ কেড়ে নেওয়া এই বন্যা দেখা দিয়েছে বেলজিয়ামেও; সেখানে আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজনীতিবিদরা আকস্মিক এই বন্যার জন্য বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন।
বিজ্ঞাপন
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, বন্যাদুর্গত আরভেইলার অঞ্চলে অনেক মানুষ নিখোঁজ। এতে করে বহু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হেলিকপ্টার দিয়ে বন্যাদুর্গত ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষজনকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক অকেজো হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দুই লাখ বাড়িঘর। ফলে এসব বাসিন্দার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। কয়েকশ সেনা সদস্য এবং আড়াই হাজার ত্রাণকর্মী উদ্ধার কার্যক্রমে পুলিশকে সাহায্য করছে।
জার্মানির রাইনল্যান্ড-পালাটিনাটে ও নর্থ রাইন-ওয়েস্টফেলিয়া প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ ও সুইজারল্যান্ডের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। তবে এসব দেশ থেকে এখনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
জার্মানির বাড নয়নার-আরভেইলার জেলায় প্রয় ১ হাজার ৩০০ জনের খোঁজ মিলছে না। আরও ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাসের মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত দেশটিতে বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল। এছাড়া বন্যাকবলিত নর্থ রাইন-ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্য সরকারের প্রধান আর্মিন ল্যাশেট বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিরুপ আবহাওয়াকে দায়ী করেছেন।
তিনি সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘আমরা বারবার এই জাতীয় ঘটনার মুখোমুখি হবো এবং এর অর্থ আমাদের জলবায়ু সুরক্ষার জন্য অতিসত্ত্বর ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি শুধু একটি রাষ্ট্রের ব্যাপার নয় এটা গোটা বিশ্বের জন্য উদ্বেগের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া ও এই কারণে ঘটা দুর্যোগের সংখ্যা আগামীতে আরও বাড়বে। তবে কোনো একটি ঘটনাকে দিয়ে এর ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। গোটা বিশ্ব আগামীতে এ রকম আরও নানান সংকটের মুখে পড়বে।
এএস