ভারি বর্ষণের কারণে সৃষ্ট তীব্র বন্যায় জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে কমপক্ষে ৪২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছেন আরও কয়েক ডজন এবং ভেঙে পড়েছে বেশ কিছু বাড়িঘর। বৃহস্পতিবার দেশটির পুলিশের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেট এবং নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্য; এ দুই রাজ্যে অনেক বাড়িঘর এবং ব্যক্তিগত যানবাহন ভেসে যেতে দেখা গেছে।

বিবিসি বলছে, জার্মানির প্রতিবেশি বেলজিয়ামেও বন্যায় চারজনের প্রাণ গেছে। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন অংশে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে প্রধান প্রধান নদীর পানি উপচে এই অঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।

রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেট রাজ্যের প্রধান মালু দ্রেয়ার ‌এই বন্যাকে ‘বিপর্যয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, সেখানে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে নিখোঁজ এবং ঝুঁকির মধ্যে আছেন। আমাদের জরুরি সার্ভিসের সব কর্মীরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যুক্তরাষ্ট্রে সফররত জার্মান চান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল বলেছেন, এই দুর্যোগে তিনি বিস্মিত হয়েছেন।

রাইনের বুক চিড়ে চলে যাওয়া আহর নদীর পানি উপচে পড়ায় রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেট রাজ্যের আহরওয়েইলার জেলায় কমপক্ষে ১৯ জন মারা গেছেন। বন্যায় বাসা-বাড়িতে আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারে ইতোমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় শত শত সেনা এবং পুলিশের হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে, দেশটির পুলিশ জানিয়েছিল, বন্যার কারণে বাসার ছাদে উদ্ধারের অপেক্ষায় রয়েছেন শত শত মানুষ।

পশ্চিম জার্মানির সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যার কারণে পরিবহন সেবা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। জার্মানির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এসডব্লিউআর বলছে, আইফেল পার্বত্য অঞ্চলের শুল্ড বেই আদেনাউ জেলায় প্রায় ২৫টি বাড়িঘর ধসে পড়ার ঝুঁকিতে আছে। কিছু কিছু বাড়িঘরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং নৌকায় করেও সেগুলোতে পৌঁছানো যাচ্ছে না।

নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের ইউস্কিরচেন জেলায় ৮ জন এবং আইফেল অঞ্চলে চারজন মারা গেছেন। বন্যার পানির তোড়ে বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ভেসে গেছে এই অঞ্চলে। এছাড়া নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়ায় দুই অগ্নিনির্বাপণ কর্মী মারা গেছেন। এ দুই কর্মীর একজন ডুবে এবং অন্যজন বাড়িতে উদ্ধার অভিযানের সময় পড়ে মারা গেছেন। এছাড়া অন্যান্য কিছু এলাকাতেও আরও বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

সূত্র: বিবিসি।

এসএস