শ্বাসতন্ত্রের রোগ করোনা গুরুতর আকার নিলে রোগীকে মেডিকেল অক্সিজেন দিতে হয়। কিন্তু মহামারি পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে হাসপাতালসহ সর্বত্র দেখা দেয় এর ঘাটতি। আর উন্নয়নশীল দেশসমূহে এই ঘাটতি দেখা দিলে কী ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয়, তা ইতোমধ্যে দেখেছে বিশ্ববাসী।

এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছেন ভারতের প্রযুক্তিবিষয়ক জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি কানপুর ক্যাম্পাসের সাবেক ছাত্র ড. সন্দীপ পাটিল। তিনি ও তার প্রতিষ্ঠান ই-স্পিন ন্যানোটেক প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মীরা এমন একটি বোতল উদ্ভাবন করেছেন, যার ভেতরে ১০ লিটার রাখা সম্ভব এবং সাধারণ অ্যারোসল স্প্রে বোতলের মতো এটি পকেটেও রাখা যাবে।

এর দামও রাখা হয়েছে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে থাকা ভারতে অক্সিজেনের চাহিদা হু হু করে বাড়তে থাকায় যেখানে দেশটির বাসিন্দাদের গত কয়েক মাসে প্রচুর টাকা খরচ করতে হয়েছে, সেখানে ১০ লিটারের একটি অক্সিরাইজের বোতলের দাম ৪৯৯ রুপি (৫৬৩ টাকা ৮৭ পয়সা)।

ইতোমধ্যে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ওষুধের দোকানসমূহে চলে এসেছে অক্সিরাইজ। এছাড়াও অনলাইন প্ল্যাটফরম অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন ওষুধের ই-কমার্স প্ল্যাটফরমেও পাওয়া যাচ্ছে এটি।

অক্সিরাইজের উদ্ভাবক সন্দীপ পাটিল বলেন, ‘এই বোতলটির বিশেষত্ব হলো- এটি গুরুতর অসুস্থ রোগীর মৃত্যুর শঙ্কা অনেকখানি কমিয়ে আনতে পারে। করোনায় শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীদের তাৎক্ষনিক ভাবে স্বস্তি দিতে অক্সিরাইজ দারুন কার্যকর।’

‘এই মহামারি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, এ দেশে অক্সিজেনের চাহিদা ঠিক কতখানি। আর এমনই এক জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যাপক ভাবে কাজে আসতে পারে অক্সিরাইজ।’

ডক্টর সন্দীপ পাতিল আরও জানান, অক্সিরাইজের এই ১০ লিটারের লিটারের বোতল যারা কিনবেন, তাদের জন্য প্যাকেটেই আর একটি ডিভাইস দেওয়া হচ্ছে। আর সেই ডিভাইস হল একটি স্প্রে, যার সাহায্যে চাহিদা রয়েছে এমন রোগীর মুখে অক্সিজেন স্প্রে-ও করা যাবে।

কোম্পানির নিজস্ব ওয়েবসাইট সডব্লিউএএসএ ডট ইনে ইতিমধ্যেই বিক্রি শুরু হয়েছে অক্সিরাইজের। এই মুহূর্তে চাহিদার সামাল দিতে প্রতিদিন ১ হাজার বোতল করে অক্সিরাইজ প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সন্দীপ।

এসএমডব্লিউ