• নিহত বেড়ে ৯২, আহত শতাধিক
• অক্সিজেন ট্যাঙ্কের বিস্ফোরণ থেকে করোনা হাসপাতালে আগুন
• একই ধরনের আগুনে এপ্রিলে প্রাণ যায় ৮২ জনের

ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলের একটি করোনা হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। শোকগ্রস্ত স্বজনরা এবং সেখানে কর্মরত একজন চিকিৎসক হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির এই ঘটনায় কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ করেছেন।

কর্মকর্তারা বলেছেন, দক্ষিণাঞ্চলের নাসিরিয়া শহরের আল-হুসেইন হাসপাতালে সোমবারের অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়েছেন শতাধিক। দেশটির পুলিশ এবং বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষ বলছে, অক্সিজেন ট্যাঙ্কের ত্রুটিপূর্ণ তারে স্পার্কের পর সেটি বিস্ফোরিত হলে আগুন দ্রুত হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়ে বলে প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে।

গত তিন মাসের মধ্যে ইরাকে হাসপাতালে এ ধরনের তিনটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল। মঙ্গলবার দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের জন্য কর্মকর্তাদের দুর্নীতিকে দায়ী করেছেন। আগুনে প্রাণহানির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে দেশটিতে শোক পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

নাসিরিয়ার আল-হুসেইন হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর সেখানে উদ্ধারকর্মীদের বিশাল ক্রেইন ব্যবহার করে পুড়ে যাওয়া অঙ্গার দেহ এবং গলে যাওয়া হাসপাতালের ধ্বংসাবশেষ সরাতে দেখা গেছে। এ সময় হাসপাতালের আশপাশে স্বজন হারানোদের ভিড় দেখা যায়।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগ মুহূর্তে ডিউটি শেষ করা একজন চিকিৎসক বলেছেন, প্রাথমিক সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকার মানেই হলো এটি দুর্ঘটনার ক্ষেত্র।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, হাসপাতালটিতে অগ্নিনির্বাপণ এমনকি সাধারণ ফায়ার অ্যালার্ম ব্যবস্থাও নেই।

‘‘গত তিন মাসে আমরা অসংখ্যবার অভিযোগ করেছি যে, একটি সিগারেট থেকেও যেকোনো মুহূর্তে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু প্রত্যেকবার আমরা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছ থেকে একই জবাব পেয়েছি- ‘আমাদের কাছে পর্যাপ্ত অর্থ নেই।’’

আগুনে পুড়ে যাওয়া কিছু মরদেহ দাফনের জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে। যাদের কফিনের পাশে অনেক স্বজনকে কান্না ও প্রার্থনা করতে দেখা যায়। তবে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া ২০টিরও বেশি মরদেহ শনাক্ত করা না যাওয়ায় ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

এর আগে, গত এপ্রিলে দেশটির রাজধানী বাগদাদের একটি কোভিড-১৯ হাসপাতালে প্রায় একই ধরনের বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৮২ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। ইরাকের আধা-সরকারি মানবাধিকার কমিশনের প্রধান আলী বায়াতি বলেছেন, যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞায় পঙ্গু হয়ে যাওয়া দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এখনো কী ধরনের অকার্যকর সুরক্ষা ব্যবস্থা আছে তা সোমবারের বিস্ফোরণে দেখা গেছে।

এদিকে, নাসিরিয়ার একটি আদালত অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১৩ স্থানীয় কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন। 

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস/জেএস