সুস্থপ্রতি ১০ রোগীর একজন দীর্ঘকালীন উপসর্গে ভুগছেন: গবেষণা
প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার প্রায় ছয় মাস পরও প্রতি ১০ জন করোনা রোগীর মধ্যে অন্তত একজনের শরীরে দীর্ঘমেয়াদি কোভিড-১৯ উপসর্গ ধারাবাহিকভাবে থেকে যাচ্ছে। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজের (এনসিআইডি) এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে বলে শনিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।
দীর্ঘকালীন এই কোভিড পরিস্থিতিতে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে করোনার উপসর্গগুলো দেখা দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি কাশি এবং শ্বাসকষ্টের মতো একেবারে সাধারণ উপসর্গে ভোগেন তারা। অন্যান্য উপসর্গ যেমন— অবিরাম ক্লান্তি, মাথা ঘোরা এবং অনিদ্রাও দেখা যায়; তবে এসব উপসর্গ খুব বেশিদিন দেখা যায়নি বলে সিঙ্গাপুরের শীর্ষ সংক্রামক ব্যাধি কেন্দ্রের গবেষণায় জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
গবেষকরা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তি গুরুতর অথবা মৃদু উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছিলেন কি-না সেদিক বিবেচনায় উচ্চ প্রদাহ শনাক্তকারী লক্ষণও গবেষণায় মিলেছে। রক্তের এই প্রোটিন শরীরের পরিবহন ব্যবস্থার সাথে যুক্ত এবং এটিকে হৃদরোগের ঝুঁকির কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় দীর্ঘকালীন কোভিড গুরুতর উদ্বেগের বিষয় বলে সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন। তারা বলেছেন, এটি যদি ব্যাপক হয় তাহলে সমাজ এবং অর্থনীতির ওপর এর গুরুতর প্রভাব পড়বে।
এনসিআইডি সিঙ্গাপুরের তিনটি হাসপাতালের ২৮৮ জন রোগীর ওপর এই গবেষণা পরিচালনা করেছে। গত বছরের জানুয়ারির মাঝের দিকে এই গবেষণা শুরু করেন সিঙ্গাপুরের গবেষকরা; সেই সময় দেশটিতে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়েছিল। গবেষণায় অংশ নেওয়া রোগীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রথম সপ্তাহ থেকে পরবর্তী ছয় মাস ধরে পর্যবেক্ষণে ছিলেন।
এনসিআইডির পরামর্শক ডা. বার্নাবি ইয়ং বলেছেন, যারা তীব্র সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাদের প্রধান অঙ্গ হিসেবে ফুসফুসই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে আমরা গবেষণায় দেখতে পেয়েছি। যদিও ভাইরাসটি অন্যান্য অঙ্গেরও ক্ষতিসাধন করেছে। এর মধ্যে হৃৎপিণ্ডের ক্ষতির পাশাপাশি ছোট ছোট রক্তনালীর অভ্যন্তরীণ আস্তরণেরও ক্ষতি রয়েছে।
কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে সার্স-কোভ-২ ভাইরাস রক্তনালীর বেশি ক্ষতি করেছে— বিশেষ করে ছোট রক্তনালীর। যা শরীরে অন্যান্য প্রত্যেক অংশেই উপস্থিত থাকে। আর এটি শরীরে রক্ত সরবরাহ এবং রক্তপাতে বাধা দেয় বলে জানিয়েছেন ডা. বার্নাবি ইয়ং। তবে এখনও দীর্ঘকালীন কোভিডের ব্যাপারে অনেক কিছুই অজানা বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে করোনায় মারা গেছেন ৩৬ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৬২ হাজার ৬৮৪ জন।
এসএস