চলতি মাসের শেষের দিকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ফাইজার-বায়োএনটেকের কাছ থেকে কেনা উদ্বৃত্ত কিছু ভ্যাকসিন দানের জন্য গ্রহীতা খুঁজছে ইসরায়েল। এ জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তেলআবিব। রোববার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এসব তথ্য দিয়েছে রয়টার্স।

তবে কতসংখ্যক ডোজ অন্য দেশের কাছে হস্তান্তর করতে চায় ইসরায়েল সে বিষয়ে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক হেজি লেভি বিস্তারিত কোনও তথ্য দেননি। রেডিও ১০৩ এফএমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গত সপ্তাহে এ ধরনের একটি চুক্তির বিষয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে আলোচনার তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি। তবে লেভি বলেছেন, এখন পর্যন্ত কোনও চুক্তি হয়নি এবং এটি এখন অতীতের বিষয়। 

এদিকে, ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ বলছে, ইসরায়েল ফাইজার-বায়োএনটেকের উদ্বৃত্ত প্রায় ১০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দানের জন্য গ্রহীতা খুঁজছে। লেভি বলেছেন, আমরা অন্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা এটি নিয়ে রাত-দিন কাজ করে চলছি। তবে কোন দেশের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।

ইসরায়েলি এই কর্মকর্তা বলেছেন, আগামী ৩১ জুলাই ভ্যাকসিন ডোজগুলোর মেয়াদ শেষ হবে। তবে ভ্যাকসিন দানের যে কোনও চুক্তি হলে তাতে ফাইজারের অনুমোদনের দরকার হবে। ফাইজারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের সম্ভাব্য অনুদানের অনুরোধের আলোচনায় তারা খুশি। 

গত মাসে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের প্রায় ১০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন প্রত্যাখ্যান করে। ওই সময় তারা জানায়, ভ্যাকসিনগুলোর মেয়াদ একেবারে শেষের দিকে।

ইসরায়েল গত বছরের ডিসেম্বরে বিশ্বের অন্যতম দ্রুতগতির টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে এখন পর্যন্ত দেশটির ৫০ ঊর্ধ্ব প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষকে টিকাদান সম্পন্ন করেছে। করোনাভাইরাস মহামারিতে বয়োজ্যেষ্ঠ এই জনগোষ্ঠীকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

তবে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে টিকার যোগ্য প্রায় এক পঞ্চমাংশ ইসরায়েলিকে এখনও টিকার আওতায় আনা যায়নি। গত জানুয়ারিতে দৈনিক সংক্রমণ গড়ে ১০ হাজারের বেশি হলেও ৯৩ লাখ মানুষের এই দেশটিতে বর্তমানে সেই সংখ্যা একের ঘরে নেমে এসেছে। যে কারণে দেশটিতে করোনার বিধি-নিষেধের বেশিরভাগই প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

কিন্তু গত মাসের মাঝের দিকে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় কিছু বিধি-নিষেধ ফিরতে পারে বলে জানিয়েছেন লেভি।

দেশটিতে টিকাদান চূড়ায় পৌঁছায় গত জানুয়ারিতে এবং তা ধীরে ধীরে কমে তলানিতে ঠেকেছে জুনে; ওই সময় দেশটির ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়া হয়। ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনার অতি-সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা স্কুলগামীদের মাঝে বেশি ছড়ানোয় শিশুদের টিকা দেওয়ার দাবি তোলেন অভিভাবকরা। পরে জুনের শুরুর দিকে দেশটিতে শিশুদের টিকাদানের হার পাঁচগুণ বৃদ্ধি করা হয়।

লেভি বলেছেন, ফাইজারের ভ্যাকসিন ডেল্টার বিরুদ্ধে ৮৫ থেকে ৮৮ শতাংশ কার্যকর। অন্যান্য প্রজাতির বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতার তুলনায় তা কম। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক এক গবেষণার বরাত দিয়ে তিনি এ তথ্য জানালেও বিস্তারিত দেননি।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস