মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী অন্তত ২৫ গণতন্ত্রকামীকে হত্যা করেছে দেশটির নিরাপত্তাবাহিনী। শুক্রবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির সাগাইং অঞ্চলে সামরিক জান্তাবিরোধীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সংঘর্ষে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।

রোববার স্থানীয় গণমাধ্যম ও বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে এই খবর দিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স। রাজধানী নেইপিদো থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে সাগাইং অঞ্চলের দেপাইন শহরে এ সহিংসতা হয়। দেশটির সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্রের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে সাড়া দেননি তিনি।

মিয়ানমারের সরকারি দৈনিক গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার বলছে, দেপাইনে টহলরত নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর ওত পেতে থাকা সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আক্রমণ চালিয়ে একজন সৈন্যকে হত্যা এবং ছয়জনকে আহত করেছে। পরে নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসীদের হামলার জবাব দিয়েছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশের শাসন ক্ষমতায় আসে সেনাবাহিনী। এই অভ্যুত্থানের পর থেকে ৫ কোটি ৩০ লাখ মানুষের এই দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। 

সামরিক বাহিনীর শাস্তির আশঙ্কায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেপাইনের একজন বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেছেন, শুক্রবার ভোরের দিকে সেখানকার একটি গ্রামে চারটি সামরিক ট্রাক থেকে সৈন্যদের নামিয়ে দেওয়া হয়।

অভ্যুত্থানবিরোধীদের নিয়ে গঠিত স্থানীয় পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের সদস্যরা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে প্রতিরোধ আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে জঙ্গলে এবং পাহাড়ে ঘাঁটি গেড়ে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণও নিচ্ছেন এই সদস্যরা। তবে তাদের কাছে অপ্রচলিত অস্ত্র থাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের সময় প্রায়ই পিছু হটতে হচ্ছে।

ওই বাসিন্দা টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, সংঘর্ষের পর দেপাইনের ওই গ্রাম থেকে মোট ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বার্মিজ বিভাগ ও স্থানীয় থ্যান লিউইন খেত নিউজ সার্ভিসও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণহানির একই তথ্য দিয়েছে। 

তবে রয়টার্স সংঘর্ষে প্রাণহানির এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক বিবৃতিতে দ্য দেপাইন পিপলস ডিফেন্স ফোর্স বলেছে, সংঘাতে তাদের অন্তত ১৮ সদস্য নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছেন।

গত ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর জান্তাবিরোধী জনগণ মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রান্তে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস গঠন করেছেন। দেশটির জাতীয় ঐক্যের সরকারের সহযোগিতায় সামরিক প্রশাসনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গোপন এই বাহিনী গঠন করা হয়েছে। 

এসএস/জেএস